সেতুভঙ্গের পরে রাতারাতি ফিরল সংলগ্ন রাস্তার হাল

মাঝেরহাট সেতু ভাঙার পরেই সারানো হল দীর্ঘ দিন ধরে খন্দে জর্জরিত থাকা ডায়মন্ড হারবার রোডের একাংশ। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, খিদিরপুর থেকে ওই রাস্তা দিয়েই মাঝেরহাট সেতুতে যাতায়াত করতেন দিনে প্রায় হাজার দেড়েক মানুষ।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:০৮
Share:

চকচকে: দ্রুত পিচের প্রলেপ পড়েছে এই রাস্তাতেই। নিজস্ব চিত্র

কারও সর্বনাশ তো কারও পৌষ মাস!

Advertisement

মাঝেরহাট সেতু ভাঙার পরেই সারানো হল দীর্ঘ দিন ধরে খন্দে জর্জরিত থাকা ডায়মন্ড হারবার রোডের একাংশ। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, খিদিরপুর থেকে ওই রাস্তা দিয়েই মাঝেরহাট সেতুতে যাতায়াত করতেন দিনে প্রায় হাজার দেড়েক মানুষ। ওই রাস্তার পাশে একাধিক মার্বেল পাথরের দোকান। তাই নিত্যদিন ভারী লরি যাতায়াত করে। কিন্তু অভিযোগ, বাসিন্দাদের বহু আবেদনেও প্রায় এক কিলোমিটার সেই রাস্তা সারাইয়ের কোনও হেলদোল ছিল না প্রশাসনের। কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ সারাই করবেন নাকি পূর্ত দফতর, তা নিয়েই চলত টানাপড়েন। অভিযোগ, মাঝেমধ্যে কোনও এক পক্ষ কিছু ইট-পাথর ফেলে পিচ ঢেলে তাপ্পি মেরে সারাই করে দিত। কিন্তু মাস ঘুরতেই ফিরত আগের অবস্থাই।

মাঝেরহাট সেতু ভাঙার পরে রাতারাতি ঝাঁ চকচকে সেই ‘অবহেলিত’ পথই। কেন? স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, ওই রাস্তা দিয়েই ভাঙা সেতুর কাছে পৌঁছনো যায়। ফলে উদ্ধারকাজের ক্রেন থেকে শুরু করে ভিআইপি-দের গাড়ি, সেই রাস্তা দিয়ে নিয়ে যেতেই এই ব্যবস্থা। অতএব যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মঙ্গলবার রাত থেকে রাস্তা খুঁড়ে, ইট ফেলে, রোলার চালিয়ে, তার উপরে পিচ ঢেলে তৈরি হয়ে গিয়েছে রাস্তা। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, এ বার আর বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনও চাপান-উতোরও হয়নি। নিজেরাই নানা মেশিন নিয়ে এসে পিচ গলিয়ে এক রাতের মধ্যে কাজ সেরে ফেলেছে। এ বার আর তাপ্পি নয়, একেবারে শক্তপোক্ত রাস্তা তৈরি হয়েছে বলেও পূর্ত দফতরের বাস্তুকারদের দাবি।

Advertisement

শুধুই কি উদ্ধারকাজের প্রয়োজনে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সারানো হল রাস্তা? স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশের কথায়, ঘটনার দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গে ছিলেন। পরদিন তাঁর আসার কথা ছিল। যদি আসার সময়ে ওই খন্দে ভরা রাস্তায় এসে পড়েন তিনি, তা হলে আর এক বিপত্তি ঘটার আশঙ্কা ছিল। কারণ, সেতু ভাঙার খবরে খুবই ক্ষুব্ধ ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই পূর্ত দফতরের বাস্তুকারেরা আর ঝুঁকি নেননি বলে অনুমান নেতাদের। পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস অবশ্য বলেন, ‘‘আমি এখন উত্তরবঙ্গে আছি। বিপর্যয়ের সময়ে তা মোকাবিলায় বিভিন্ন জায়গায় নানা কাজ হয়েছে। কোথায়, কোন কাজ কী ভাবে হয়েছে, তা আমি এই মুহূর্তে বলতে পারব না।’’

মাঝেরহাট সেতুর দুর্ঘটনার পরদিন সকালে এই রাস্তা দেখে স্বস্তি পেয়েছেন স্থানীয়েরাও। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘রাস্তাটা দেখে মনে হচ্ছে, বছর দুয়েক নিশ্চিন্ত থাকা যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন