পুলিশ পরিচয় দিয়ে সোনার দোকানের এক কর্মচারীর থেকে সোনা ছিনতাই করেছিল এক দল দুষ্কৃতী। তার তদন্তে নেমে হাওড়া সিটি পুলিশ একটি বড়সড় ছিনতাই চক্রের সন্ধান পেল। সোমবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনা থেকে গ্রেফতার হয় ওই চক্রের চার পাণ্ডা। ধৃতদের নাম সঞ্জয় দেবরায়, শঙ্কর পোদ্দার, নিতাই রায় ও মন্টু শেখ।
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১ অক্টোবর পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার বাসিন্দা স্বর্ণ ব্যবসায়ী অসীম বেরা তাঁর দোকানের কর্মী বিনোদ পালকে গয়না নিয়ে যেতে কলকাতার সোনাপট্টিতে পাঠিয়েছিলেন। বিনোদবাবুর সঙ্গে ছিল একটি সোনার বাট। নিয়ম অনুযায়ী, একটি নির্দিষ্ট হিসেবের মাধ্যমে বাট থেকে সোনা কেটে গয়নার মূল্য নিয়ে বাটটি ক্রেতাকে দিয়ে দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। পুলিশ জানায়, বিনোদবাবু ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ লক্ষাধিক টাকার গয়না ও সোনার বাট নিয়ে হাওড়া সব্জি বাজারের কাছে হাওড়া-দীঘা বাসস্যান্ডে আসেন। সেখান থেকে এগরাগামী একটি বাসেও ওঠেন। এর পর বাসটি যখন ফোরশোর রোডের কাছে আসে তখন বাসযাত্রী সেজে বসে থাকা ৯ জন দুষ্কৃতী নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে সোনা পাচারের অভিযোগ তুলে বিনোদবাবুকে জোর করে বাস থেকে নামায়। তার পর রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি টাটা সুমোয় তুলে পোস্তা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে একটি নির্জন জায়গায় গিয়ে বিনোদবাবুকে মারধর করে গয়নার ব্যাগ হাতিয়ে পালায়।
ঘটনার পরের দিনই দোকানের মালিক অসীমবাবু হাওড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ সিসি ক্যামেরার ছবি পরীক্ষা করে অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণ পায়। এর পরেই হাওড়া সিটি পুলিশ বিভিন্ন জেলার পুলিশের থেকে খবর নিতে শুরু করে একই ধরনের ঘটনা আর কোথায় ঘটেছে। শেষে খবর আসে ঠিক একই রকম ছিনতাইয়ের ঘটনা ৮ মাস আগে ব্যারাকপুরে ঘটেছে। ওই ঘটনায় ২ জনকে চিহ্নিতও করেছে ওই জেলার পুলিশ।
এর পরে পুলিশ ওই দু’জনের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে জানতে পারে ১ অক্টোবর ছিনতাইয়ের সময়ে তারা হাওড়াতেই ছিল। পুলিশ সোমবার রাতে প্রথমে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করে। পরে ধরা হয় বাকি দু’জনকেও। হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি ডিডি সুমিত কুমার জানান, ধৃতদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িত বাকি পাঁচ জনকে খুব শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে।