অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য।
আগ্নেয়াস্ত্র ও ভোজালির সামনে স্ত্রী-শিশুপুত্রকে দেখে থরথর করে কাঁপতে শুরু করেছিলেন গৃহকর্তা। হাতজোড় করে বলেন, ‘‘যা আছে নিয়ে যাও। প্রাণে মেরো না।’’
গৃহকর্তার এমন হাল দেখে দুষ্কৃতীরা সিনেমা-যাত্রার ভিলেনের ঢঙে অট্টহাসিতে ফেটে পড়েনি। বরং নরম, শান্ত গলায় উত্তর দিয়েছে, ‘‘দাদা, আমরা শিক্ষিত ছেলে। পেটের দায়ে ডাকাতি করছি। ভয় নেই, ক্ষতি করব না।’’ কথাও রেখেছে তারা। ঘণ্টা দুয়েক ধরে লুঠপাট চালালেও বাড়ির লোকেদের গায়ে সামান্য আঁচড়ও কাটেনি।
মঙ্গলবার রাতে বাঁশদ্রোণীর নিউ গভর্নমেন্ট কলোনির এই ঘটনায় তদন্তে নেমেছে রিজেন্ট পার্ক থানা ও লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। কিন্তু বুধবার রাত পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের টিকির হদিসও পায়নি তারা।
পুলিশ সূত্রের খবর, নিউ গভর্নমেন্ট কলোনির বাসিন্দা প্রলয় বিশ্বাস ওই বাড়ির একতলায় স্ত্রী ববিতা ও ছেলে পুষ্পককে নিয়ে থাকেন। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ কিছু আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় প্রলয়বাবুর। পাশের ঘরে গিয়ে দেখেন, ববিতা ও পুষ্পকের সামনে আগ্নেয়াস্ত্র ও ভোজালি নিয়ে দাঁড়িয়ে চার যুবক। প্রলয়বাবু তাদের সামনে হাতজোড় করে বসে পড়েন। তখনই দুষ্কৃতীরা তাঁকে আশ্বস্ত করে। তবে চিৎকার না করার নির্দেশও দেয়।
পুলিশ জানায়, ১৬ হাজার টাকা, গয়না ও মোবাইল লুঠ হয়েছে বলে অভিযোগ হয়েছে। প্রলয়বাবু পুলিশকে জানান, ভোর পাঁচটা নাগাদ বেরোয় দুষ্কৃতীরা। তার পরে পুলিশে জানান তিনি। পুলিশ জানায়, প্রলয়বাবুদের একতলার একটি ঘরের জানলার গ্রিল কেটে ঢুকেছিল ডাকাতেরা।
এই ঘটনায় এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাসিন্দাদের মধ্যে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরেও পুলিশ কেন দুষ্কৃতীদের ধরতে পারল না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। লালবাজারের কর্তারা জানান, অভিযুক্তদের স্কেচ আঁকানো হয়েছে। তাদের খোঁজ চলছে।