Russia

Russia-Ukraine War: যুদ্ধবিরোধীরা গেলেন কোথায়? ফেসবুকে ক্রোধ নেই, মিছিলও নেই কলকাতা জুড়ে

ইরাক থেকে ভিয়েতনাম, ভেনেজুয়েলা— অতীতে এমন যে কোনও পরিস্থিতিতে যুদ্ধ বিরোধিতায় মুখর অতিকায় সব মিছিলের সাক্ষী হয়েছে কলকাতা শহর। কিন্তু ২৪ ফেব্রুয়ারির পর এখনও পর্যন্ত দেখা নেই কোনও যুদ্ধবিরোধী মিছিলের। এমনকি নেটমাধ্যমেও হাতে গোনা যুদ্ধবিরোধিতার চেনা স্বর। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, যুদ্ধবিরোধীরা গেলেন কোথায়?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৯:০৩
Share:

ফাইল ছবি।

মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের কালো হাত ভেঙে দাও বলে বার বার রাস্তায় নেমেছে কলকাতা। কিন্তু রাশিয়া নিয়ে নিশ্চুপ সেই শহর। রাশিয়া আক্রমণ করেছে ইউক্রেন। হামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। প্রাণভয়ে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন মানুষ। রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে গোটা বিশ্বের যুদ্ধ বিরোধী মানুষ পথে নেমেছেন। এমনকি খাস রাশিয়াতেও এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে পথে নেমে গ্রেফতার হচ্ছেন শয়ে শয়ে মানুষ। কেবল কলকাতার রাজপথে সেই চেনা যুদ্ধবিরোধী মিছিলের দেখা নেই।

ইরাক থেকে ভিয়েতনাম, ভেনেজুয়েলা— অতীতে এমন যে কোনও পরিস্থিতিতে যুদ্ধ বিরোধিতায় মুখর অতিকায় সব মিছিলের সাক্ষী হয়েছে কলকাতা শহর। যে মিছিলের ধারে, ভারে অবশ্যই এগিয়ে বামপন্থীরা, বিশেষত সিপিএম। কিন্তু ২৪ ফেব্রুয়ারির পর এখনও পর্যন্ত দেখা নেই কোনও যুদ্ধবিরোধী মিছিলের। এমনকি গত কয়েক বছর ধরে যে নেটমাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে বাদ-প্রতিবাদের যুদ্ধক্ষেত্র, সেখানেও হাতে গোনা যুদ্ধবিরোধিতার চেনা স্বর। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, যুদ্ধবিরোধীরা গেলেন কোথায়?

Advertisement

সিপিএম ইদানীং নেটমাধ্যমে প্রবল সক্রিয়। কিন্তু সেখানেও নেই চোখে পড়ার মতো কোনও পোস্ট। সিপিএমের পলিটব্যুরো অবশ্য একটি বিবৃতি জারি করেছে। ‘শান্তিই অগ্রাধিকার’ শীর্ষক ১১ লাইনের বিবৃতিতে সিপিএম পলিটব্যুরো ঘটনাপ্রবাহে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি আগ্রাসনের পক্ষে রাশিয়ার যুক্তিকেও ঘুরিয়ে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে সে দেশে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে উদ্ধারের ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে আবেদন করা হয়েছে। তাতে কোথাও নেই কর্মী, সদস্যদের পথে নামার আহ্বান। তাৎপর্যপূণ ব্যাপার হল, পলিটব্যুরোর ইউক্রেন সংক্রান্ত সেই বিবৃতির ঠাঁই হয়নি পশ্চিমবঙ্গ সিপিএমের নিজস্ব ফেসবুক বা টুইটার পেজেও!

গত দু’দিন ধরেই পুতিনকে নায়ক হিসেবে তুলে ধরে ভারতেও রুশ প্রেসিডেন্টের মতো ‘ঘরে ঢুকে মারার’ নীতি নেওয়ার পক্ষে জোর সওয়াল নেটমাধ্যমে চোখে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে পথে বা নেটমাধ্যমে—কোথাওই নেই বামপন্থীরা। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিপিএম নেতা বলছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় কমিটি বা পলিটব্যুরো নির্দেশ দিলেই আমরা পথে নামি, মিছিলে পা মেলাই। এমন কোনও নির্দেশ এখনও পর্যন্ত আসেনি। পলিটব্যুরো বিবৃতি দিয়েছে। সেটাই আমাদের বক্তব্য।’’

Advertisement

সিপিএম এখনও পথে না নামলেও, যুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তির পক্ষে আহ্বান জানিয়ে পথে নামবে বলে জানিয়েছে সিপিআইএমএল (লিবারেশন)। শনিবার দিল্লিতে যুদ্ধবিরোধী পদযাত্রা হবে। লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কেন এই আড়ষ্টতা জানি না। এই মুহূর্তে সবাই খোলা চোখে দেখতে পাচ্ছে, কী রকম আক্রমণ ইউক্রেনের উপর হচ্ছে। সেটা কোনও মতেই সমর্থনযোগ্য নয়। সকলেরই বলিষ্ঠ ভাবে যুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া উচিত। বামপন্থী দলগুলোকেই এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে।’’

কিন্তু যে কলকাতা, বিশ্বের যে প্রান্তেই যুদ্ধ হোক, গর্জে উঠেছে লাল পতাকা হাতে নিয়ে, সে আজ এমন নীরব, ম্রিয়মান কেন? কারণ কি বামেদের বর্তমান সাংগঠনিক দুর্বলতা, না কি দুর্বলতার নাম ‘রাশিয়া’? সে সোভিয়েত থাকুক আর নাই থাকুক!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন