—প্রতীকী ছবি।
সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টর থেকে জোর করে গাড়িতে তুলে এক নেপালি তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া চার জনকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিল বারাসত জেলা আদালত।
সরকারি কৌঁসুলিরা এই ঘটনার সঙ্গে নির্ভয়া-কাণ্ডের সাদৃশ্যের কথা তুলে ধরেছিলেন আদালতে। তাঁদের দাবি, দিল্লির ওই ঘটনার পরে গণধর্ষণের এমন ঘটনা বিরল। তাই তাঁরা দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি তোলেন।
বুধবার ওই আদালতের সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক শুভায়ু বন্দ্যোপাধ্যায় এই রায় দিয়েছেন। ধর্ষণের ঘটনায় দোষী অর্ণব বেরা, শুভেন্দু নাগ, সৌরভ দে এবং সুব্রত দত্তকে কারাদণ্ডের সঙ্গে ৪০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৬ মাসের জেল। এ ছাড়াও, নির্যাতিতা ওই নেপালি তরুণীকে ‘ভিকটিম কমপেনসেশন স্কিম’ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে।
এ দিন অভিযুক্তদের আইনজীবী তীর্থঙ্কর পাল আদালতে জানান, ধৃতদের আগে কোনও অপরাধের রেকর্ড নেই। প্রত্যেকেরই বয়স ২৬-এর মধ্যে। তিন জন বিবাহিত। তাদের সন্তানও রয়েছে। এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে ন্যূনতম সাজার আর্জি জানান তিনি।
পাল্টা দাবিতে সরকার পক্ষের আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানান, এই ঘটনা নির্ভয়া-কাণ্ডকে মনে পড়িয়ে দিচ্ছে। নির্ভয়ার মৃত্যু হয়েছিল। আর এই ঘটনায় নির্যাতিতা কোনও মতে প্রাণে বাঁচেন। কিন্তু রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত লাগাতার গণধর্ষণ করা হয়েছে তাঁকে। যে ভয়াবহতার স্মৃতি আমৃত্যু বয়ে বেড়াবেন ওই তরুণী। তাই কোনও মতেই দোষীদের সাজা দেওয়ার ক্ষেত্রে যেন নরম মনোভাব না
দেখায় আদালত।
২০১৬ সালের ২৯ মে রাতে পাঁচ নম্বর সেক্টর থেকে ওই তরুণীকে জোর করে গাড়িতে তুলে ঘুরতে থাকে ধর্ষণকারীরা। পরের দিন ভোরে সল্টলেকের ২০৬ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের কাছে ওই তরুণী গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে নেমে প্রাণে বাঁচেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও লাগাতার গণধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়। তরুণী পুলিশকে জানান, তাঁকে খুন করে রাস্তায় ফেলে যাওয়ার পরিকল্পনা শুনেই তিনি গাড়ি থেকে লাফ দিয়েছিলেন। তদন্তে নেমে বিধাননগর পুলিশ মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে চার যুবককে গ্রেফতার করে।
এই মামলায় অভিযোগ প্রমাণের ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিন প্রমাণ বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানান, মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে অভিযোগকারিণী এবং অভিযুক্তদের অবস্থান যে ঘটনার সময়ে একই জায়গায় ছিল, তা প্রমাণ করা সম্ভব হয়েছে।