জায়গা অমিল, পার্কোম্যাট তাই দূর অস্ত্‌

শহরে গাড়ি পার্কিংয়ের সমস্যা নিয়ে নাকাল প্রশাসন। এই সমস্যার সমাধানের জন্য শহরের বিভিন্ন এলাকায় পার্কোম্যাট তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। পুরসভা সূত্রে খবর, জায়গার অভাবে এখনও সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা যায়নি।

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৬ ০১:৪০
Share:

শহরের একটি পার্কোম্যাট। ছবি: নিজস্ব চিত্র

শহরে গাড়ি পার্কিংয়ের সমস্যা নিয়ে নাকাল প্রশাসন। এই সমস্যার সমাধানের জন্য শহরের বিভিন্ন এলাকায় পার্কোম্যাট তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। পুরসভা সূত্রে খবর, জায়গার অভাবে এখনও সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা যায়নি। এমনকী, কবে এই পরিকল্পনা দিনের আলো দেখবে, সে বিষয়েও পুর-কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট কোনও সময় জানাতে পারেননি।

Advertisement

কলকাতা পুরসভার পার্কিং দফতরের ভারপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘শহরে পার্কোম্যাট তৈরি নিয়ে আমরা উদ্যোগী। কিন্তু জায়গার অভাবে তা করা যাচ্ছে না। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কী ভাবে পার্কোম্যাট তৈরি সম্ভব, সে জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেব।’’

কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের পার্কিংয়ের জায়গা এমনিতেই কম। তার উপরে রয়েছে অবৈধ পার্কিংয়ের সমস্যা। সব মিলিয়ে রাস্তার পরিসর সঙ্কীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ, উত্তর এবং মধ্য কলকাতার ছোটখাটো গলি এবং রাস্তায় এই সমস্যা বেশি হয়। আবার পোস্তা এবং বড়বা়জারে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা থাকলেও যত্রতত্র পার্কিং করা হয় বলে অভিযোগ। একই ছবি দেখা যায় অফিস পাড়াতেও।

Advertisement

বড়বাজার এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, অনেক সময় এমন ভাবে গাড়ি দাঁড় করানো থাকে যে বাড়ি থেকে বেরোনো যায় না। পুরসভার কাছে এই সমস্যা সমাধানের আবেদন জানানো হলেও পুর-কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ তাঁদের। ২০০০ সালে তৎকালীন মেয়র সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সময়ে শহরে রডন স্ট্রিট এবং লিন্ডসে স্ট্রিটে পার্কোম্যাট তৈরি করা হয়েছিল। লিন্ডসে স্ট্রিটের পার্কোম্যাটটি ভূগর্ভস্থ। এর পরে শহরে আর কোনও পার্কোম্যাট তৈরি হয়নি।

বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য মেয়র থাকাকালীন পার্কোম্যাট তৈরি নিয়ে বিশেষ উদ্যোগ দেখা যায়নি। ২০১০ সালে তৃণমূল পুরবোর্ড গড়ার পরে ফের পার্কোম্যাট তৈরিতে উদ্যোগী হয়। পুরসভার পার্কিং দফতরের এক আধিকারিক জানান, পার্কিংয়ের সমস্যার কথা ভেবে শহরের বাণিজ্যিক এবং অফিসপাড়া এলাকায় এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে পুরসভা থেকে সমীক্ষা করা হয়। ধর্মতলা চত্বর ছাড়াও বড়বাজার, পোস্তা, ক্যামাক স্ট্রিট এবং এলগিন রোডের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা হয়। কিন্তু দেখা যায়, প্রকল্পের জন্য যতটা জায়গা দরকার তা নেই।

পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, অফিসপাড়ার ক্ষেত্রে জমি পাওয়াই প্রধান সমস্যা। সমস্যা সমাধানের জন্য পুরসভা অন্য সরকারি দফতর থেকেও জমি কিনতে প্রস্তুত। সে বিষয়ে প্রাথমিক স্তরে আলোচনা হয়েছে। কলকাতা পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের এক আধিকারিক জানান, শহরে পুরসভার জমি ছাড়াও পূর্ত দফতর, কলকাতা বন্দর, কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি-র (কেএমডিএ) জমি আছে। সেখানেও যদি কোনও খালি জায়গা পাওয়া যায় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি ওই জায়গা পুরসভাকে হস্তান্তর করেন, তা হলে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করা যেতে পারে। তবে এখনও এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন