রাজারহাটের দশদ্রোণ এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি স্কুল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া এবং সেখানকার শিক্ষকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছিল এক প্রোমোটারের বিরুদ্ধে। শনিবারের ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন প্রোমোটার মিজানুর রহমান। রবিবার আরও দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের নাম নাজমুল ওয়াসিম ও আমানুল্লা মোল্লা। পুলিশ জানিয়েছে, দু’জনেই মিজানুরের সঙ্গী। মিজানুরকে রবিবার আদালতে তোলা হলে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়।
যদিও এর পরেও বিধাননগর পুলিশের উপরে ক্ষোভ কমেনি স্কুল কর্তৃপক্ষের। লীলাদেবী মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউশন নামে ওই স্কুলটি এ দিন দেখতে যান বিধাননগরের মেয়র তথা তথা রাজারহাট-নিউ টাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। তাঁর সামনেই বাগুইআটি থানার ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন স্কুলের আধিকারিকেরা। প্রধান শিক্ষক কৌশিক ভট্টাচার্যের অভিযোগ, রবিবার তাঁরা বাগুইআটি থানায় গিয়ে দেখতে পান, অভিযুক্তদের একাংশ থানা চত্বরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কৌশিকবাবুর দাবি, কর্তব্যরত অফিসারকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে বলেন। যদিও ভয়ে তা করতে পারেননি কৌশিকবাবুরা। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘প্রোমোটার ও তাঁর লোকজন আমাদের ভয় দেখিয়ে বলেছিল, প্রশাসন ওদের হাতের মুঠোয়। থানায় গিয়ে সেটাই স্পষ্ট হল।’’
প্রধান শিক্ষকের মুখে এই কথা শুনে সব্যসাচীবাবু ফোনে পুলিশকে দ্রুত পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেন। মেয়র জানিয়েছেন, স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁরা সব সহযোগিতা করবেন। আজ, সোমবার বিধাননগরের পুর-কমিশনার অলোকেশপ্রসাদ রায়ের নেতৃত্বে ইঞ্জিনিয়ারেরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন। পাশাপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে, আজ, সোমবার থেকেই অস্থায়ী ভাবে ক্লাস শুরু করা হবে।
আপাতত স্কুলের ভাঙা ঘরগুলি থেকে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে জায়গা সাফ করেছেন পুরকর্মীরা। ভাঙা ছাদও প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
এ দিন মেয়রের সঙ্গে ছিলেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহনওয়াজ আলি মণ্ডল (ডাম্পি)। গিয়েছিলেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। স্বাতীদেবী অভিযোগ করেন, তাঁকে স্কুল নিয়ে জটিলতার কথা জানানো হয়নি। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, ডাম্পির পাশাপাশি স্বাতীদেবীকেও ঘটনার কথা জানানো হয়েছিল। এর পরেই স্বাতীদেবী প্রশ্ন তোলেন, ঘটনা জানা সত্ত্বেও কেন ডাম্পি ঘটনার দিন আসেননি। ডাম্পি বলেন, ‘‘ঘটনার দিন বাইরে ছিলাম।তা সত্ত্বেও স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব রকম সহযোগিতা করা হয়েছে। মেয়র যেখানে কথা বলেছেন, সেখানে শিষ্টাচার মেনে আমি আর কিছু বলব না।’’
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তির ক্ষেত্রে পুরসভা কী ভাবে পদক্ষেপ করবে? সব্যসাচীবাবু বলেন, ‘‘রাজারহাট এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে বহু বেআইনি কাজ চলছে বলে অভিযোগ এসেছে। এ বার পরিস্থিতির বদল ঘটবে। আইনগত ভাবে কী করা যায়, সেটাই দেখা হচ্ছে।’’