প্রিয়াঙ্কা ভঞ্জচৌধুরী
ভারী ব্যাগের কারণেই যে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছে তাদের স্কুলের ছাত্রী, এমনটা মানতে নারাজ স্কুল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষ এ-ও মানছেন, সিলেবাস শেষ করার তাড়ায় বই আনতে গিয়ে কখনও কখনও ভারী হয়ে যায় স্কুলব্যাগ। ফলে একই স্কুলের কর্তৃপক্ষের কথায় ধরা পড়ছে ভিন্ন সুর। এ দিকে, আহত ছাত্রীর মায়ের আবেদনের ভিত্তিতে বুধবার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
গত সোমবার স্কুলের সিঁড়ি থেকে পড়ে শিরদাঁড়ায় গুরুতর চোট পায় লিলুয়ার দশম শ্রেণির ছাত্রী প্রিয়াঙ্কা ভঞ্জচৌধুরী। আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে সে। ঘটনার পরে অভিযোগ উঠেছিল, ভারী ব্যাগের কারণেই টাল সামলাতে না পেরে পড়ে গিয়েছিল ওই ছাত্রী।
প্রিয়াঙ্কার চিকিৎসার ব্যাপারে তার পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য মঙ্গলবার লিলুয়ার অগ্রসেন বালিকা শিক্ষা সদন কর্তৃপক্ষকে মৌখিক আবেদন জানান অন্য অভিভাবকেরা। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, ওই রাতে একটি ই-মেল মারফৎ ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে এবং সহযোগিতা চেয়ে আবেদন পাঠান প্রিয়াঙ্কার মা সুজাতাদেবী। এর পরে স্কুলের তরফে প্রিয়াঙ্কার চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজ জমা দিতে বলা হয়। বুধবার দুপুরে অন্য ছাত্রীর অভিভাবক স্কুলে গিয়ে তা জমা দিয়েছেন।
এ দিন স্কুলের সহ-অধ্যক্ষ কাকলি নাগ বলেন, ‘‘ছাত্রীর মায়ের সঙ্গে ঠিক মতো যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তবে চিকিৎসার কাগজ পেয়েছি। বিষয়টি মানবিকতার সঙ্গে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তিনি জানান, প্রিয়াঙ্কার পরিবারের আর্থিক অবস্থা যে তত স্বচ্ছল নয়, তা কর্তৃপক্ষ জানেন। তাই আগেও তাকে স্কুলের তরফে পড়াশোনা সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে। স্কুলের চেয়ারম্যান বাসুদেব টিকমানি বলেন, ‘‘ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। সহ-অধ্যক্ষকে বলেছি হাসপাতালে গিয়ে ছাত্রীর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে। সাহায্যের বিষয়টিও আলোচনা করছি।’’
তবে ভারী ব্যাগের কারণেই যে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে তা সরাসরি স্বীকার করছেন না কর্তৃপক্ষ। এ দিনও কাকলিদেবী বলেন, ‘‘ছাত্রীদের সমস্যা হতে পারে, এমন অতিরিক্ত ওজন আমরা কখনও চাপাই না। তবে সিলেবাস অনুযায়ী পড়া শেষ করতে গিয়ে কখনও বই আনতে হয়। তাতে ব্যাগ কিছুটা ভারী হতে পারে।’’ তাঁর দাবি, প্রতিটি শ্রেণিতেই ডেস্কে দু’জন ছাত্রী বসে। আর তাই আটটি পিরিয়ডের বইও ভাগ করে আনারই নিয়ম। এ দিনও কাকলিদেবী সব শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের জানান, প্রয়োজন ছাড়া যেন অতিরিক্ত বই ও খাতা কেউ না আনে।
এ দিন প্রিয়াঙ্কার পরিবারের তরফে কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বুধবার প্রিয়াঙ্কাকে বসানো হয়েছে। তার অবস্থা স্থিতিশীল, তবে বিপন্মুক্ত নয়।