প্রতীকী ছবি।
অতিমারি নিয়ে সংশয়, শঙ্কার নেপথ্যে কী রয়েছে? বিষয়টি নিয়ে রবিবার অনলাইনে হয়ে গেল একটি আলোচনা। আয়োজন করেছিল ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স’। অংশগ্রহণকারীরা সকলেই জানালেন, সংশয় বা অনুমান নয়, বিজ্ঞানকে হাতিয়ার করেই করোনার মোকাবিলা করা প্রয়োজন।
যেমন, সদ্যোজাত থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত বয়সি ১০০ জনের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি বিষয়ক গবেষণা করে জনস্বাস্থ্য চিকিৎসক অজয় রায়ের পর্যবেক্ষণ, ৮০ জনের করোনা হয়েছিল। প্রশ্ন ওঠে, কার্যত ঘরবন্দি থেকেও শিশুরা আক্রান্ত হল কী করে? তা হলে শিশুদের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা কি যুক্তিসঙ্গত?
প্রতিষেধকের বাধ্যবাধকতার প্রসঙ্গটিও আলোচনায় উঠে আসে। বুস্টার ডোজ় নেওয়ার পরেও লন্ডনের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ তৃতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। আবার দক্ষিণ আফ্রিকায় সকলে দু’টি ডোজ় নেননি। কিন্তু দু’টি দেশেই ওমিক্রনে মৃত্যুর হার একই। সেই পরিস্থিতিতে সকলকেই বুস্টার ডোজ় দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা কতটা, সেই প্রশ্নও ওঠে। সকলেরই মত, প্রতিষেধক হয়তো রোগের তীব্রতাকে কমাতে পারে। কিন্তু আক্রান্ত হওয়া আটকাতে পারে না। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে হার্ড ইমিউনিটি তৈরির উপরেই জোর দেন সকলে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্স-এর প্রতিষ্ঠাতা অধিকর্তা পার্থ মজুমদার জানান, প্রাণীর শরীরে থাকা ভাইরাস মানবশরীরে প্রবেশ করছে। মানুষের জিনের পক্ষে সেটিকে চিনতে অসুবিধা হওয়ার কারণেই সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বিষয়টি স্পষ্ট জানতেই জিনোম স্টাডি করা হচ্ছে। অ্যান্টিবায়োটিক এবং অন্য ওষুধের ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ভাইরোলজিস্ট অমিতাভ নন্দী। তিনি এবং শিশু রোগ চিকিৎসক অরুণ সিংহ জানান, ভাইরাস প্রবেশের পরে শরীরে যে প্রদাহ তৈরি হয়, তা দমাতে পারে একমাত্র স্টেরয়েড। উঠে আসে অনিয়ন্ত্রিত কোমর্বিডিটির কথাও। পুরনো রোগ এবং করোনা সংক্রমণ, এই দুই প্রদাহের তৈরি ধাক্কাতেই রোগী সঙ্কটজনক হচ্ছেন। অর্থনীতির শিক্ষক জয়তী ঘোষ, লেখক পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা, জাতীয় কোভিড টাস্ক ফোর্সের পরামর্শদাতা জয়প্রকাশ মুলিইল, ইন্ডিয়ান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সঞ্জয় কে রাইও ছিলেন এ দিনের আলোচনায়।