‘সৎপাত্রে’র খোঁজে চিড়িয়াখানা

রাজ্য জ়ু অথরিটি-র সদস্য-সচিব বিনোদকুমার যাদব বলছেন, ‘‘আলিপুর চিড়িয়াখানার কোনও মেয়ে জ়েব্রার বদলে অন্য কোনও চিড়িয়াখানা থেকে সাবালক পুরুষ জ়েব্রা আনা যায় কি না, তার খোঁজ চলছে।’’

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০১:২০
Share:

আহ্লাদ: বুধবার, আলিপুর চিড়িয়াখানায়। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

বড়ই সমস্যা রোশনি, দ্যুতির। মেয়ে, নাতনি নিয়ে ভরা সংসার ওদের। কিন্তু সাবালক পুরুষ বলতে এক জনই। তার নাম উজ্জ্বল। বংশ বাড়াতে সে-ই আপাতত গোটা পরিবারের

Advertisement

একমাত্র ভরসা।

এই জ়েব্রা পরিবার নিয়ে তাই এখন চিন্তার শেষ নেই আলিপুর চিড়িয়াখানার কর্তাদের। বংশবৃদ্ধি ‘স্বাভাবিক’ করতে পুরুষের খোঁজ শুরু করেছেন তাঁরা।

Advertisement

রাজ্য জ়ু অথরিটি-র সদস্য-সচিব বিনোদকুমার যাদব বলছেন, ‘‘আলিপুর চিড়িয়াখানার কোনও মেয়ে জ়েব্রার বদলে অন্য কোনও চিড়িয়াখানা থেকে সাবালক পুরুষ জ়েব্রা আনা যায় কি না, তার

খোঁজ চলছে।’’

আলিপুর চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, গত রবিবার একটি জ়েব্রা শাবক জন্মেছে আলিপুরে। তাকে নিয়ে এখন দশটি জ়েব্রা রয়েছে চি়ড়িয়াখানায়। কিন্তু একমাত্র উজ্জ্বলই প্রজননে সক্ষম পুরুষ জ়েব্রা। বাকি দু’টি পুরুষ জ়েব্রা এখনও কৈশোর পেরোয়নি। ছ’টি মেয়ে অবশ্য সাবালিকা হয়েছে। তাই সকলেরই ‘প্রেমিক’ বলতে

ওই উজ্জ্বলই।

চিড়িয়াখানার এক কর্তা বলছেন, ‘‘মাস কয়েক আগে দ্যুতির একটি শাবক জন্মেছিল। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি। সেই শাবকের বাবা ছিল উজ্জ্বল। গত রবিবার দ্যুতির এক মেয়ে যে সন্তানের জন্ম দিয়েছে, তার বাবাও উজ্জ্বল!’’ চিড়িয়াখানার একটি সূত্র বলছে, বাকি দু’টি পুরুষ জেব্রার কৈশোর পেরিয়ে সাবালক হতে বছর দুয়েকের ধাক্কা। তত দিন

অপেক্ষা করা উচিত হবে না। তা ছাড়া, একই পরিবারের মধ্যে প্রজনন হলে জিনগত বৈচিত্রেও ভাটা পড়ে। নবজাতকের স্বাস্থ্যের কথা বিচার করলে তা কাম্য নয়। পরিবারে জিনগত বৈচিত্র আনতে তাই পরের ঘরের ‘ছেলে’ জরুরি।

এখনও পর্যন্ত সাদা-কালো ডোরাকাটাদের পরিবারে স্বাস্থ্যের তেমন কোনও সঙ্কট নেই বলেই চিড়িয়াখানার একটি সূত্রের দাবি। পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে

দৈনন্দিন পর্যাপ্ত খাবারের জোগানও রয়েছে। আলিপুর চি়ড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্ত জানান, এক-একটি জ়েব্রাকে দৈনিক গড়ে সাড়ে আট কিলোগ্রাম খাবার

দিতে হয়। সেই তালিকায় রয়েছে গমের ভুসি, ওট, বার্লি, শুকনো ছোলা, ভুট্টার দানা, গাজর, রাঙা আলু, ঘাস। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাও হয় তাদের।

‘কন্যা-সর্বস্ব’ পরিবার নিয়ে আক্ষেপ নেই চিড়িয়াখানার অধিকর্তার। আশিসবাবু বলছেন, ‘‘মানুষ হোক বা জ়েব্রা, মেয়েরা সব সময়ই লক্ষ্মী হয়। বাইরে থেকে জামাই আনতে পারলে তো ভালই হয়!

দেখা যাক।’’

আলিপুরের জ়েব্রা পরিবারে তেমন ‘সৎপাত্র’ কবে মেলে, সেটাই এখন দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন