দ্রুত ভাঙছে রাস্তা, মান নিয়ে সংশয়

ব্লকের ভিতরের রাস্তা খারাপ। খারাপ বাইরের রাস্তাও। কয়েকটি জায়গা নয়, সল্টলেকের নানা জায়গায় রাস্তা খারাপ নিয়ে এমন অভিযোগ উঠছে। পুরপ্রশাসনের দাবি, খারাপ রাস্তা মেরামত করা হবে। কাউন্সিলররা তালিকা জমা করছেন। সেই অনুসারে পর্যায়ক্রমে কাজ হচ্ছে।

Advertisement

কাজল গুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩৭
Share:

ভঙ্গুর: এমনই হাল সল্টলেকের রাস্তার। ছবি: শৌভিক দে

ব্লকের ভিতরের রাস্তা খারাপ। খারাপ বাইরের রাস্তাও। কয়েকটি জায়গা নয়, সল্টলেকের নানা জায়গায় রাস্তা খারাপ নিয়ে এমন অভিযোগ উঠছে। পুরপ্রশাসনের দাবি, খারাপ রাস্তা মেরামত করা হবে। কাউন্সিলররা তালিকা জমা করছেন। সেই অনুসারে পর্যায়ক্রমে কাজ হচ্ছে। তাঁদের আরও দাবি, বিধাননগর পুর এলাকার অধিকাংশ বড় রাস্তা ম্যাস্টিক অ্যাসফল্টে মুড়ে ফেলা হয়েছে। বাকি রাস্তাগুলির মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে।

Advertisement

বাসিন্দাদের অভিযোগ, সল্টলেকের রাস্তা আগেও মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই বেশির ভাগ রাস্তায় পিচ উঠে গিয়ে এবড়ো-খেবড়ো হয়ে গিয়েছে। কোথাও রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। কোথাও আবার আইল্যান্ডের কাছে, চারমাথার মোড়ের কাছে বিপজ্জনক গর্ত তৈরি হয়েছে। কয়েক মাস ধরে এই অবস্থা চলছে। বাসিন্দাদের প্রশ্ন, জরুরি ভিত্তিতে রাস্তা মেরামতির পরিকাঠামো কী নেই পুরসভার? কবে দরপত্র হবে, কবে বরাত দেওয়া হবে, তার পরে কাজ শুরু হবে, সব মিলিয়ে বেশ সময় লাগে।

বাসিন্দাদের অভিযোগের সারবত্তা যে রয়েছে, তার নমুনাও মিলবে সল্টলেকের বিভিন্ন জায়গায়। বিধাননগর পুরভবন থেকে এফডি ব্লকের রাস্তা ধরে ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেলের দিকে এগোলেই প্রথম আইল্যান্ডের কাছেই রাস্তায় ছোটবড় গর্ত তৈরি হয়েছে। শুকনো দিনেও অনেক সময় তা জলে ভরা থাকে। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, সম্ভবত রাস্তার নীচে পাইপ ফেটে গিয়ে জল রাস্তায় আসছে। কিন্তু মেরামতের নামগন্ধ নেই।

Advertisement

আইল্যান্ড পার করে রাস্তার ছবিটি কমবেশি একই রকম। আবার বিধাননগর মিউনিসিপ্যাল স্কুল থেকে ইই ব্লকের যাওয়ার রাস্তা কিংবা ইই ব্লক থেকে হোমিওপ্যাথি হাসপাতাল যাওয়ার রাস্তাও ভেঙেচুরে গিয়েছে। গাড়িচালক সুনীল মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই রাস্তা ধরে রাতে গেলে খুব সমস্যা। ওই রাস্তায় আলো কম। ফলে দূর থেকে ওই ভাঙা অংশ চোখে পড়ে না। দুর্ঘটনার প্রবল আশঙ্কা থাকে।’’

এই ছবি মাত্র দু’টি ওয়ার্ডের। সল্টলেকের চারটি সেক্টরের বিভিন্ন ব্লকের ভিতরের রাস্তা নিয়েও কমবেশি একই অভিযোগ। বাসিন্দারা বলছেন, নতুন পুরবোর্ডের উপর তাঁদের অনেক প্রত্যাশা। পুরসভা পরিকাঠামো সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু তত্পরতা চোখে পড়ছে না। প্রশ্ন উঠেছে, পুরপ্রশাসন আগে জানিয়েছিল, তিন বছরের মধ্যে রাস্তা ভেঙে গেলে বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থাকেই মেরামত করতে হবে। কিন্তু সেই কাজ আদৌ হচ্ছে কি?

প্রশাসনের একটি অংশের মতে, পুরসভার আয় সীমিত। তার উপরে রাজারহাট-গোপালপুরের মতো তুলনায় পিছিয়ে পড়া এলাকা রয়েছে। সেখানে পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সেই কাজ হচ্ছে। তাই একটু সময় বেশি লাগছে। সল্টলেকবাসীদের দাবি, রাজারহাটকে -গোপালপুরকে সল্টলেকের সঙ্গে যুক্ত করলে এই সমস্যা হবে, তা আগেই তাঁরা আশঙ্কা করেছিলেন।

এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পুরকর্তারা। বিধাননগরের ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই অধিকাংশ রাস্তা সারাই করা হয়েছে। কাউন্সিলরদের প্রস্তাব অনুসারে রাস্তার তালিকা তৈরি করে মেরামতের বরাত দেওয়ার কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি রাস্তা সারিয়ে তোলা হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যে রাস্তা নির্দিষ্ট সময়সীমার আগেই খারাপ হচ্ছে, তার সম্পর্কে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বরাত পাওয়া সংস্থা বা ঠিকাদারকে তা মেরামত করতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন