যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত ছাত্রী অনামিকা মণ্ডল। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া অনামিকা মণ্ডলের মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে সরব হল বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে এসএফআই দাবি করল, যে পুকুরে পড়ে অনামিকার মৃত্যু হয়েছে, তা সংস্কারের অভাবে বিষাক্ত হয়ে গিয়েছে। ওই পুকুর ফেন্সিং দিয়ে ঘেরা, সংস্কার করার দাবি জানালেও কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ করলেন এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে।
গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেটের অদূরে একটি পুকুর থেকে অনামিকার দেহ উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে পুলিশ জানতে পেরেছে, জলে ডুবেই মৃত্যু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার নিমতার বাসিন্দা অনামিকার। তবে প্রশ্ন উঠছে, অনামিকা কি অসাবধানতাবশত জলে পড়ে গিয়েছিলেন না কি কেউ ঠেলে ফেলে দিয়েছিলেন তাঁকে? শুধু তা-ই নয়, আত্মহত্যার তত্ত্বও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। যদিও পরিবার সেই তত্ত্ব মানতে নারাজ। সোমবার মৃতার বাবা অর্ণব মণ্ডল যাদবপুর থানায় যান। মেয়ের মৃত্যু নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। সূত্রের খবর, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তোলে মৃতার পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ। এ ছাড়াও, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের ধারাতেও মামলা রুজু হয়েছে।
অনামিকার দেহ উদ্ধারের পরেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, ক্যাম্পাসে সিসিটিভির প্রয়োজনীয়তা ফের এক বার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এই ঘটনা। পাল্টা মঙ্গলবার এসএফআইয়ের তরফে বলা হয়েছে, পুকুর সংলগ্ন এলাকায় যে ক’টি সিসিটিভি রয়েছে, তা-ও ছাত্র আন্দোলনের দাবি মেনেই বসানো হয়েছিল। দেবাঞ্জন বলেন, ‘‘নিরাপত্তার জন্য যত খুশি সিসিটিভি বসানো হোক। কিন্তু তা যেন নজরদারির জন্য না হয়।’’
শুধু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নয়। রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকার দিকেও আঙুল তুলেছে এসএফআই। তাদের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ডিন অফ স্টুডেন্টস— সকলেই অস্থায়ী। দেবাঞ্জন বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালের হা-ডু-ডু খেলার জন্যই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে রয়েছে।’’