কলকাতা পুরসভাকে ভাড়া না দিয়ে ১৩ বছর ধরে দিব্যি দোকান চালিয়েছেন তাঁরা। বকেয়া ভাড়ার পরিমাণ প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা। পুর বাজেটের প্রাক্কালে পুর-বাজারগুলোর বকেয়া ভাড়ার পরিমাণ জানতে গিয়ে এমনই চিত্র ধরা পড়েছে বাজার দফতরের মেয়র পারিষদের চোখে। পুরসভার ওই বাজারটি হলো বাঁশদ্রোণির কালীতলা মার্কেট। নথিপত্র অনুসারে, ২০০৩ সাল থেকে ওই বাজারের স্থায়ী দোকানদারেরা কেউ ভাড়া দেননি। সেখানে দোকানের সংখ্যা ১০৭। একটা গোটা বাজারের দোকানদারদের ভাড়া না দেওয়ার ঘটনা পুরসভার ইতিহাসে বিরল বলেই মনে করেন একাধিক আমলা। সেই সঙ্গে উঠে আসছে নজরদারির প্রসঙ্গও।
পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতায় পুরসভার নিজস্ব বাজার ৪৬টি। কালীতলা মার্কেটও রয়েছে সেই তালিকায়। দোকান করার জন্য সেখানে স্টলও করে দিয়েছে পুর প্রশাসন। স্টলে সব্জি, মাছ, মুদিখানা, বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম, মাংস, ফল-সহ বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান রয়েছে। পুরসভার মেয়র পারিষদ (বাজার) আমিরুদ্দিন (ববি) জানান, প্রতি মাসে ভাড়া বাবদ প্রায় ৩১ হাজার টাকা আয় হওয়ার কথা পুরসভার। কিন্তু ২০০৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত এক পয়সাও ওই বাজার থেকে আয় হয়নি। দিন কয়েক আগে বিষয়টি নজরে পড়ে তাঁদের। এর পরেই গত সপ্তাহে মেয়র পারিষদ (বাজার) দফতরের অফিসারদের নিয়ে ওই বাজারে যান। সোমবার আমিরুদ্দিন বলেন, ‘‘অবিলম্বে বকেয়া টাকা মেটানোর জন্য প্রতিটি স্টল মালিককে বলা হয়েছে।’’
২০০৩ সাল থেকে তৃণমূল, বামফ্রন্ট বোর্ড পুরসভা চালিয়েছে। এত কাল ওই বিষয়টা ধরা পড়ে নি কেন?
এ প্রশ্নের সরাসরি কোনও উত্তর দিতে চাননি আমিরুদ্দিন। তাঁর বক্তব্য, এখন ধরা পড়েছে। তাই বকেয়া টাকা দ্রুত আদায়ের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রতি দোকানদারের বকেয়া পাওনার তালিকা বের করা হয়েছে। তা পাঠানো হচ্ছে ওই বাজারের দোকানমালিকদের কাছে। দ্রুত তা মেটাতেও বলা হচ্ছে তাঁদের।
অন্য দিকে, ওই বাজারের দোকানদারের বক্তব্য, বকেয়া টাকার সঙ্গে জরিমানাও যুক্ত হয়েছে। জরিমানা-সহ বকেয়া টাকা দেওয়ার সাধ্য নেই তাঁদের। জরিমানা মকুব করার আবেদন জানাচ্ছেন তাঁরা। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, আবেদন জমা পড়লে মেয়রের কাছে পাঠানো হবে। তাঁর সম্মতি মিললেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।