প্রতীকী ছবি।
টাকার জন্য জামাই মেয়েকে মারধর করছেন দেখে প্রতিবাদ করেছিলেন শ্বশুর। তখন আচমকাই শ্বশুরের পেটে ভোজালি ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল জামাইয়ের বিরুদ্ধে। বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে বরাহনগরের নোয়াপাড়ায়। গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত শ্রীনাথ মালো-কে।
পুলিশ জানায়, ঘটনার পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শ্বশুর রাসু রাজবংশীকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পরেই উত্তেজিত জনতা শ্রীনাথকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে পুলিশ এসে তাঁকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রের খবর, এর পরে তাঁর বুকে ব্যথা শুরু হওয়ায় শ্রীনাথকেও একই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকদের অনুমান, তাঁর পাঁজরে আঘাত লেগেছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, নোয়াপাড়ার মৎস্যজীবী কলোনির বাসিন্দা, ষাট বছরের রাসুবাবুর বাড়ির পাশেই থাকেন তাঁর বড় মেয়ে মায়া ও শ্রীনাথ। জামাই ও শ্বশুর দু’জনেই স্থানীয় বাজারে মাছ বিক্রি করেন। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই স্ত্রীর উপরে অত্যাচার করতেন শ্রীনাথ। নেশার টাকার জন্য রাসুর উপরেও চাপ দিতেন। মেয়ের উপরে অত্যাচার বন্ধ করতে রাসুবাবু জামাইয়ের অন্যায় মেনেও নিতেন। অভিযোগ, এ দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ নেশার টাকা দেওয়ার জন্য মায়াকে মারধর শুরু করেন শ্রীনাথ। সেই সময় তার প্রতিবাদ করেন শ্বশুর। আর তাতেই দু’জনের বচসা বাধে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন বচসার সময়ে রাসুবাবু সাফ জানিয়ে দেন, শ্রীনাথকে আর টাকা দেওয়া হবে না। তাতেই ক্ষেপে গিয়ে ঘরে থাকা ভোজালি শ্বশুরের পেটে ঢুকিয়ে দেন শ্রীনাথ। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধ। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে যায়। তখন উত্তেজিত জনতা শ্রীনাথকে ধরে গণধোলাই দেয়। খবর পেয়ে বরাহনগর থানার পুলিশ গিয়ে শ্রীনাথকে গ্রেফতার করে।
অন্য দিকে, রাসুবাবুকে প্রথমে বরাহনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচার করা হয়। তবে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, রাসুবাবুর পেটে প্রায় ৫ ইঞ্চি গভীর ক্ষত হয়েছে। তাই চিকিৎসার জন্য তাঁকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
খবর পেয়ে হাসপাতালে যান স্থানীয় কাউন্সিলর অঞ্জন পাল। তিনি বলেন, ‘‘আগেও বহু বার শ্রীনাথকে বোঝানো হয়েছে। থানার অভিযোগও হয়েছে। কিন্তু কারও কোনও কথাই ও শুনত না। আজ এমন কাণ্ড বাধাল, যা ভাবা যায় না।’’