বাঁদিক থেকে অনন্ত প্রামাণিক, অভিজিৎ দলুই ও অর্ণব ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র
সম্প্রতি সেন্ট পলস কলেজে ছাত্র সংসদের এক পদাধিকারীকে নগ্ন করে হেনস্থা এবং সেই ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। ওই ঘটনায় ধৃত পাঁচ জনকে বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে ১৮ জুন পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়। তবে কেস ডায়েরিতে ‘ত্রুটি’ থাকার জন্য তদন্তকারী অফিসারের প্রতি অসন্তোষও প্রকাশ করেন বিচারক। অন্য দিকে, এ দিনই অভিযুক্তদের একাংশের বিরুদ্ধে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন আর এক ছাত্র।
অভিযোগকারী ছাত্রটি জানিয়েছিলেন, ‘স্টুডেন্টস এড ফান্ড’-এর হিসেব চাওয়া নিয়ে গোলমালের জেরে তাঁকে হেনস্থা করা হয়। এতে জড়িত ছিলেন এক শিক্ষাকর্মীও। সেই পাঁচ অভিযুক্ত অর্ণব ঘোষ, অভিজিৎ দলুই, শেখ ইনামুল হক, অনন্ত প্রামাণিক এবং আব্দুল কায়ুম মোল্লাকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগেই কলেজ কর্তৃপক্ষ বহিষ্কার করেছিলেন দুই ছাত্র অর্ণব এবং অভিজিৎকে। সাসপেন্ড করা হয় শিক্ষাকর্মী অনন্তকেও।
অভিযুক্তদের আইনজীবী পূর্ণেন্দু মাইতি এ দিন ধৃতদের জামিনের আবেদন জানান। তিনি অভিযোগ করেন, গ্রেফতারের আগে যে নোটিস পাঠানো উচিত ছিল, তা হয়নি। তিনি আরও দাবি করেন, তাঁর মক্কেলদের যে সব ধারা দেওয়া হয়েছে, সেগুলির অধিকাংশই জামিনযোগ্য। সরকারি আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায় বলেন, যে ভাবে ওই ছাত্রকে নগ্ন করে হেনস্থা করা হয়েছে, তাতে তিনি আত্মহত্যাও করতে পারতেন। তা ছাড়া যে মোবাইলে ভিডিয়ো করা হয়েছে, সেটি উদ্ধারের প্রয়োজন। তাই অভিযুক্তদের ২২ জুন পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত দেওয়া হোক। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক পাঁচ জনের ১৮ তারিখ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত দেন।
তবে পুলিশের একটি অংশের মত, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সময়ে কায়ুম উপস্থিত থাকার প্রমাণ মেলেনি। নিগৃহীত ছাত্রটি অবশ্য এ দিনও জানিয়েছেন, তিনি এখনও আতঙ্কে আছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ছাত্র আরও জানান, গত ১৭ মে ভিডিয়োটি তোলা হয়েছিল। কিন্তু প্রাথমিক তদন্তে দেখা যাচ্ছে, সেটি করা হয়েছিল আরও আগে। ঘটনার প্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের এই আচরণ বরদাস্ত করা হবে না। তাঁদের চরম শাস্তি হওয়া দরকার।’’
এ দিনই অন্য এক ছাত্র অভিযোগ করেন, সেন্ট পলস কলেজে ভর্তির জন্য তিনি অর্ণবকে সব পরীক্ষার আসল শংসাপত্র ও টাকা দিয়েছিলেন। অর্ণবই জানিয়েছিলেন, টাকার ভাগ দিতে হয়েছিল কায়ুম ও ইনামুলকে। কিন্তু এই ঘটনার পর থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি ওই ছাত্র। সে কারণেই তিনি পুলিশে যান।