সেন্ট পলস-কাণ্ডে জামিন নাকচ

পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৭ মে ওই কলেজের ছাত্র সংসদের এক পদাধিকারীকে নগ্ন করে সেই ভিডিয়ো ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৮ ০৩:১২
Share:

বাঁদিক থেকে অনন্ত প্রামাণিক, অভিজিৎ দলুই ও অর্ণব ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র

সেন্ট পলস কলেজের ছাত্র সংসদের এক পদাধিকারীকে নগ্ন করা ছাড়াও র‌্যাগিংয়ের আরও প্রমাণ হাতে পেয়েছে পুলিশ। সেই প্রমাণ হিসেবে সোমবার আদালতে একটি ছবি পেশ করেন সরকারি আইনজীবীরা। তাঁদের দাবি, কলেজে নাপিত ডেকে জনা পনেরো ছাত্রের মাথা মুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ দিনই সেন্ট পলস-কাণ্ডে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের হদিস পেতে ধৃত পাঁচ জনকে ২২ জুন পর্যন্ত ফের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মামলার তদন্তকারীরা আদালতে আরও জানান, কলেজের আর এক ছাত্র তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ এনেছেন। তারও তদন্ত শুরু হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৭ মে ওই কলেজের ছাত্র সংসদের এক পদাধিকারীকে নগ্ন করে সেই ভিডিয়ো ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট ছাত্রের থেকে জোর করে টাকা আদায়েরও অভিযোগ ওঠে। তদন্ত শুরু করে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা। ১২ জুন গ্রেফতার করা হয় পাঁচ অভিযুক্ত অর্ণব ঘোষ, অভিজিৎ দলুই, শেখ ইনামুল হক, অনন্ত প্রামাণিক এবং আব্দুল কায়ুম মোল্লাকে। প্রথম দফায় আদালত তাদের ১৮ জুন পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।

সোমবার ফের পাঁচ অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করায় পুলিশ। সরকারি কৌঁসুলি তমাল মুখোপাধ্যায় ও স্নেহাংশু ঘোষ জানান, ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। কারণ, ছাত্রটিকে নগ্ন করার পরে যে ফোনে ভিডিয়ো তোলা হয়েছিল, সেটির হদিস ধৃতেরা দিচ্ছে না। ফোনটি না মিললে তদন্ত সম্পূর্ণ হবে না। সরকারি কৌঁসুলিরা এ-ও অভিযোগ করেন, বিভিন্ন কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার ছুতোয় পড়ুয়াদের থেকে তোলা আদায়ে সক্রিয় রয়েছে একটি চক্র। অভিযুক্তেরা সেই চক্রের সদস্য। ওই চক্রে বাকি যারা জড়িত রয়েছে, তাদের খোঁজ পেতেও অভিযুক্তদের ফের জেরা করা দরকার। তমালবাবু অভিযোগ করেন, অভিযুক্তেরা পুলিশি হেফাজতে থাকলেও তাদের সঙ্গীরা অভিযোগকারী ছাত্র ও তাঁর পরিবারকে হুমকি দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করতে বলছে।

Advertisement

পাঁচ অভিযুক্তের জামিনের আবেদন জানিয়ে তাদের আইনজীবী সুশান্ত দত্ত বলেন, তাঁর মক্কেলদের বিরুদ্ধে তোলাবাজির কোনও প্রমাণ পেশ করতে পারেনি পুলিশ। অভিযুক্তেরাই যে ওই ছাত্রকে নগ্ন করে সেই ভিডিয়ো ছড়িয়ে দিয়েছে, তারও কোনও প্রমাণ নেই। সুশান্তবাবুর অভিযোগ, একই কলেজের ছাত্র সংসদের দু’টি গোষ্ঠীর অন্তর্দ্বন্দ্বের শিকার তাঁর মক্কেলরা। আদালত তাদের যে কোনও শর্তে জামিন দিক।

জামিনের বিরোধিতা করে সরকারি কৌঁসুলিরা বলেন, অভিযুক্তেরা এখন তাঁদের সঙ্গীদের দিয়ে হুমকি দেওয়াচ্ছে অভিযোগকারী ছাত্রকে। জামিনে ছাড়া পেলে তারা নিজেরা সরাসরি হুমকি দেবে। তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টাও করবে।

দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে এ দিন বিচারক পাঁচ অভিযুক্তকে আরও চার দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন