শিল্প তালুকে বিপর্যয় সামলাতে পরিকল্পনা

আন্তর্জাতিক স্তরে রাজ্যের শো-কেসে অন্যতম গুরুত্বর্পূণ স্থান নিউ টাউন এবং সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টর। ঝড়-বৃষ্টি, অগ্নিকাণ্ড, দুর্ঘটনা-সহ যে কোনও বিপর্যয় হলে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ এবং দমকল বাহিনী। কিন্তু এলাকার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক সংস্থার দায়িত্ব কী? নিউ টাউন এবং পাঁচ নম্বর সেক্টরের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুকে বিপর্যয়ের একাধিক ঘটনার পরে প্রশাসনের ভিতরে ও বাইরে এমনই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে।

Advertisement

কাজল গুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ০১:২৯
Share:

বহুতলে ভরে উঠেছে এলাকা। পাশাপাশি রয়েছে শপিং মল, হোটেল, রেস্তোঁরা এবং আবাসিক এলাকা। আন্তর্জাতিক স্তরে রাজ্যের শো-কেসে অন্যতম গুরুত্বর্পূণ স্থান নিউ টাউন এবং সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টর। ঝড়-বৃষ্টি, অগ্নিকাণ্ড, দুর্ঘটনা-সহ যে কোনও বিপর্যয় হলে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ এবং দমকল বাহিনী। কিন্তু এলাকার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক সংস্থার দায়িত্ব কী? নিউ টাউন এবং পাঁচ নম্বর সেক্টরের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুকে বিপর্যয়ের একাধিক ঘটনার পরে প্রশাসনের ভিতরে ও বাইরে এমনই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে।

Advertisement

এ বার তাই বিপর্যয় মোকাবিলায় পদক্ষেপ করতে নিজস্ব পরিকাঠামো গড়ে তোলার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এবং নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে আলোচনা করেন। সিদ্ধান্ত হয়, বিপর্যয় মোকাবিলায় কী করণীয়, কী পরিকাঠামো তৈরি করা হবে তা নিয়ে রূপরেখা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ব্লু প্রিন্ট তৈরির পরে ফের আলোচনা হবে।

তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুক হিসেবে পরিচিত পাঁচ নম্বর সেক্টরে অফিসের পাশাপাশি রয়েছে শপিং মল, রেস্তোরাঁ, হোটেল। মাত্র ৪৩২ একর এলাকা ভরেছে বহুতলে। বিপর্যয়ের একাধিক ঘটনায় পুলিশ এবং দমকলকে কাজ করতে দেখা গিয়েছে। শিল্পতালুকের কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, পুলিশ-দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর যাওয়া ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষের নিজস্ব বাহিনী কিংবা পরিকাঠামো থাকলে আরও দ্রুত কাজ করা সম্ভব। যেমন, কিছু দিন আগেই আচমকা ঝড়-বৃষ্টিতে এলাকার বেশ কিছু জায়গায় গাছ, ল্যাম্পপোস্ট উপড়ে যায়। ভেঙে যায় রাস্তার ধারের রেলিং। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে সে সব সরাতে কার্যত ৭২ ঘণ্টারও বেশি সময় পার হয়ে যায়।

Advertisement

কমবেশি ছবিটা একই নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির আওতাধীন এলাকায়। পাঁচ নম্বর সেক্টরের শিল্পতালুকের চেয়েও এর আয়তন অনেকটা বেশি। আবাসিক এলাকা, বাণিজ্যিক এবং বিনোদন ক্ষেত্রে ভরা নিউ টাউন শহরবাসীর কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। পাশাপাশি প্রতি দিন কর্মসূত্রে এখানে আসেন প্রচুর মানুষ। ফলে সমস্যার বহরও বেশি। সূত্রের খবর, বড় সমস্যা মোকাবিলার পর্যাপ্ত পরিকাঠামো এখনও গড়ে ওঠেনি এই দুই প্রশাসনিক সংস্থার।

এই সব অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখে দুই প্রশাসনিক সংস্থা এ বার নিজস্ব পরিকাঠামোর তৈরি করতে পরিকল্পনা নিয়েছে। পাশাপাশি বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে সংস্থার যে সব কর্মীরা কাজ করবেন তাঁদের জন্য হেলমেট সহ সুরক্ষা ব্যবস্থা, পরিচিতির জন্য আর্মড ব্যান্ডের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। দুই সংস্থারই চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলেন, ‘‘আমরা পরিকাঠামো তৈরির অভিপ্রায়ে রূপরেখা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছি। একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন প্রসিডিওর বা এসওপি চালুর চেষ্টা হচ্ছে।’’

তবে এমন পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের কথায়, প্রতিদিন যাঁরা পরিষেবা দিচ্ছেন, তাঁরাই বিপর্যয় মোকাবিলায় এগিয়ে এলে কাজ দ্রুত গতিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন