রাজপথে তাঁকে লক্ষ করে বোমা ছুড়ে পালিয়েছে মোটরবাইক-আরোহী দুষ্কৃতীরা — প্রাথমিক ভাবে এমনটাই অভিযোগ ছিল পেশায় প্রোমোটার গৌতম বসাকের। তাঁর অভিযোগ অনুযায়ী, শনিবার রাত দেড়টা নাগাদ মানিকতলা থানা এলাকার ক্যানাল ইস্ট রোড এবং উল্টোডাঙা মেন রোডের মোড়ের কাছে ঘটনাটি ঘটে। গৌতমবাবুর বাড়ি মানিকতলা মেন রোডে।
পুলিশ জানিয়েছে, পরে জেরার মুখে বয়ান বদলে ফেলেন ওই প্রোমোটার। কারণ, রবিবার ভোরে ই এম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে গৌতমবাবু ভর্তি হওয়ার পরে হাসপাতাল থেকে পুলিশ জানতে পারে, তাঁর দেহে বোমার আঘাতের চিহ্ন নেই। পুলিশ সূত্রের খবর, গৌতমবাবুর ডান দিকের বগলের তলায় ও ডান কানের নীচে আঘাত রয়েছে। তবে, তা বোমার আঘাত নয়।
তা হলে আগে তিনি কেন বলেছিলেন যে, মোটরবাইকে করে বাড়ি ফেরার সময়ে পিছন থেকে অন্য একটি মোটরবাইক থেকে দুষ্কৃতীরা তাঁকে বোমা ছুড়ে পালায়? পুলিশি জেরার মুখে গৌতমবাবুর বক্তব্য, ওই রাতে তিনি একটি পানশালা থেকে বেরিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁর বন্ধু মোটরবাইক চালাচ্ছিলেন এবং তিনি ছিলেন পিছনের আসনে। এই অবস্থায় ক্যানাল ইস্ট রোড এবং উল্টোডাঙা মেন রোডের মোড়ের কাছে তিনি মোটরবাইক থেকে পড়ে যান। গৌতমবাবুর যুক্তি, সেই সময়ে এত জোরে আওয়াজ হয়েছিল যে, তাঁর মনে হয় কেউ বোমা ছুড়েছে এবং তার অভিঘাতেই তিনি পড়ে গিয়েছেন। পরে তিনি নিজেই পুলিশকে জানান, মত্ত অবস্থায় ছিলেন বলেও তাঁর এমনটা মনে হতে পারে।
পুলিশ পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। একটি মামলাও শুরু করা হয়েছে। খতিয়ে দেখা হয়েছে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ। সেখানে অবশ্য ওই রাতে গৌতমবাবুদের মোটরবাইক ছাড়া দ্বিতীয় কোনও মোটরবাইকের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। পুলিশের একাংশের মতে, কেউ বাইরে থেকে বোমা ছুড়ে মারলে তো গৌতমবাবুর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ জানানোর কথা ছিল। সেটাও করা হয়নি। পুলিশ নিজে থেকে মামলা শুরু করেছে। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়েও কোনও বোমা ফাটার দাগও মেলেনি।
স্থানীয় একটি সূত্রের তরফে অবশ্য দাবি, এলাকায় বেআইনি নির্মাণের অভিযোগও রয়েছে গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে। হতে পারে, সেই কারণে অভিযোগ জানাতে চাইছে না তাঁর পরিবার। পুলিশ সূত্রের খবর, গৌতমবাবু প্রায় বছর আটেক ধরে এলাকায় বাড়ি তৈরির কাজ করছেন। থানায় তাঁর বিরুদ্ধেও মারপিট, সরকারি কর্মীকে কর্তব্যে বাধাদান-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে।