বছর ঘুরলেও ‘আশা’য় ভরসা করছেন মেয়র

শুক্রবার গড়িয়াহাটের সেই ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, কালো প্লস্টিকের ছাউনিতে ঢেকে রয়েছে ফুটপাতের দোকানগুলি। ঠিক যেমনটি এক বছর আগে ছিল। সেই ছবির কোনও পরিবর্তন হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:১৭
Share:

অনিয়ম: আবেদন উড়িয়ে প্লাস্টিকের ছাউনির নীচেই চলছে ব্যবসা। ছবি: রণজিৎ নন্দী

গত বছর জানুয়ারির মাঝামাঝি গড়িয়াহাটের একটি বস্ত্র বিপণিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর পরই কলকাতা পুরসভা ঘোষণা করেছিল, রাস্তার ধারে প্লাস্টিকের ছাউনির নীচে ব্যবসা করা যাবে না। হকারদের উদ্দেশ্যে পুজোর মধ্যেই প্লাস্টিক সরানোর আর্জি জানিয়েছিলেন মেয়র। তিনি আরও জানান, কলকাতা পুরসভা স্টল তৈরি করে দেবে। তার নীচেই ব্যবসা করতে হবে হকারদের। শহরের ফুটপাতে বসে ব্যবসা করা হকারদের উদ্দেশ্যে এই আবেদন ছিল তাঁর। এক বছর ধরে সেই আবেদন অগ্রাহ্য হতে দেখেও ‘আশা’য় ভরসা করছেন মেয়র।

Advertisement

শুক্রবার গড়িয়াহাটের সেই ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, কালো প্লস্টিকের ছাউনিতে ঢেকে রয়েছে ফুটপাতের দোকানগুলি। ঠিক যেমনটি এক বছর আগে ছিল। সেই ছবির কোনও পরিবর্তন হয়নি। আরও এক বার আগুন লাগলেই ফের তা প্লাস্টিকের ছাউনিতে ধরে দ্রুত ছড়িয়ে ফিরিয়ে আনবে সেই স্মৃতি। এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন পুরসভার এক আধিকারিক।

আগুন লাগার ঘটনার পরেও শিক্ষা হয়নি। সুতরাং আবেদন-নিবেদনে যে কাজ হবে না, তা মনে করছেন পুরসভার অনেকেই। যদিও বাম আমলে অপারেশন সানশাইনের স্মৃতির কথা মনে রেখে সংঘাতের পথে যেতে নারাজ বর্তমান পুর বোর্ড। এ দিকে, আগুন লাগলে তার দায়ও বর্তাবে পুর প্রশাসনের উপরে। আসন্ন পুরভোট, তাই সে সব কথা ভেবে প্রশাসন ধীরে চলার নীতি নিয়েছে বলে পুর মহলের একটি অংশের খবর। মেয়র অবশ্য বলছেন, ‘‘শীত পড়েছে। সুতরাং পুলিশকে বলেছি, রাস্তার পাশে ফুটপাত থেকে প্লাস্টিকের ছাউনি খুলে দিতে বলুন হকারদের। অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা তো রয়েছেই। পাশাপাশি ধুলো জমে দূষণ বাড়াচ্ছে।’’

Advertisement

প্রায় এক বছর আগে গড়িয়াহাটের একটি বস্ত্র বিপণিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়। আশপাশের স্টলের প্লাস্টিকের ছাউনিতে আগুন লেগে তা দ্রুত ছড়ায়। এর পরেই পুর প্রশাসন জানিয়েছিল, প্লাস্টিকের ছাউনি দিয়ে ব্যবসা করা যাবে না। মেয়রের আবেদনেও সাড়া না মেলায় প্রশ্ন উঠছে, আগুন লাগার আরও একটি ঘটনা না ঘটলে কি হকারেরা সচেতন হবেন না? কয়েক জন হকারকে পুরসভা স্টল দিয়েছিল। কিন্তু সে সব তাঁরা ব্যবহার করেন না। গড়িয়াহাটের অনেক হকার জানিয়ে দিয়েছেন, পুরসভার স্টল নেওয়ার কোনও আগ্রহও তাঁদের নেই।

নির্দেশ অমান্য হতে দেখেও প্রশাসন কত দিন নীরব থাকবে? মেয়রের বক্তব্য, ‘‘আমরা হকারদের অনুরোধ করতে পারি। জবরদস্তি করার পক্ষপাতী নই আমরা। প্লাস্টিক থেকে আগুন কী ভাবে ছড়ায়, তা তাঁরা দেখেছেন। আশা করব, হকারেরা সচেতন হবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন