কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ ভবনের বাংলা বিভাগ। সোমবার বেলা এগারোটা পনেরো। বিভাগীয় প্রধানের ঘরে বসে কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকা।
হঠাৎই হন্তদন্ত হয়ে ঢুকলেন এক তরুণী। চিৎকার করে গালিগালাজ করে, কার্যত তেড়ে গেলেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দিকে। তার পরেই শুরু হল তাণ্ডব। টেবিল উল্টে, নথিপত্র ছুড়ে ফেলে, উল্টে ফেলে দিলেন কম্পিউটার। আলমারি ধরে টানা-হেঁচড়াও শুরু করেন তিনি। তখন ভয়ে ওই ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে চেয়ার-টেবিল উল্টে ফেলতে থাকেন ওই তরুণী। এ দিকে বারোটা থেকে ওই ভবনেই পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। আরও কিছু ক্ষণ পরে নিজেই দরজা খোলেন তিনি। তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন শিক্ষকেরাও।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণীর নাম মামনি সর্দার। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানার নেপালগঞ্জে। ২০১৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই বাংলায় স্নাতকোত্তর পাশ করেন তিনি। পুলিশের অনুমান, ওই তরুণী মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁর বাবা সুজিত সর্দার জানিয়েছেন, মাস তিনেক আগে তাঁর মেয়ের এই মানসিক অসুস্থতা ধরা পড়ে।
ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে। দু’টি দরজায় পরিচয়পত্র দেখে ঢুকতে দেওয়ার নিয়ম থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে ভিতরে ঢুকলেন মামনি? গত জুলাইয়ে আন্দোলনরত শিক্ষকদের উপরে বহিরাগতেরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। আগেও বিবেকানন্দ কলেজে বহিরাগতদের হাতে নিগৃহীত হতে হয় খোদ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুগত মারজিতকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) স্বাগত সেন বলেন, ‘‘ যাচাই করে ঢোকানো হয়। কিন্তু কেউ যদি ভিতরে ঢুকে কিছু করে, সেটা তো নিরাপত্তারক্ষীদের পক্ষে বোঝা মুশকিল। সমস্যা আছে কি না, দেখছি।’’