বিশৃঙ্খলা: বুলডোজার দিয়ে এ ভাবেই ভাঙা হয় স্কুলের পাঁচিল।নিজস্ব চিত্র
একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের গেট এবং পাঁচিল ভাঙাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল এলাকায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়, ব্যারাকপুরে।
স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বিজ্ঞপ্তি না দিয়েই স্কুলের সম্পত্তি ভেঙেছে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড। এ দিকে ওই স্কুলেই চলছে আইসিএসই বোর্ডের পরীক্ষা। এই অবস্থায় কী ভাবে ভাঙচুর চলতে পারে, প্রশ্ন উঠেছে সেখানেও। যদিও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড জানিয়েছে, দীর্ঘদিন আগেই ওই স্কুলে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছিল। তার পরে তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, উপরন্তু কোনও আলোচনায়ও আসেনি।
এ দিন পাঁচিল ভাঙার খবর ছড়াতেই হাজির হন পড়ুয়া, অভিভাবক এবং শিক্ষকেরা। স্কুল ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড অফিসের সামনের রাস্তায় বসে অবরোধ করেন তাঁরা। রাত পর্যন্ত অবরোধ চলে। পড়ুয়ারা তাতে সামিল হওয়ায় পুলিশও দীর্ঘক্ষণ পদক্ষেপ করতে পারেনি।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বছরখানেক আগে এই ইংরেজি মাধ্যম স্কুল-সহ কয়েকটি স্কুল এবং অন্যান্য অফিসকে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে বিজ্ঞপ্তি
পাঠায়। বলা হয়, বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে। ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অভিযোগ, ওই স্কুলের পাঁচিলের কিছু অংশ এবং মূল প্রবেশপথ সেনাবাহিনীর এলাকায়। সেই অংশই ভাঙতে বলা হয়েছিল।
পথে নেমেছেন অভিভাবকেরা। মঙ্গলবার, ব্যারাকপুরে।
এ দিন বিকেল পাঁচটা নাগাদ যন্ত্র নিয়ে সেনাকর্মীরা স্কুলের সামনে দাঁড়াতেই নিরাপত্তারক্ষীরা শিক্ষকদের খবর দেন। তাঁদের আসার আগেই ভাঙা শুরু হয়। ইতিমধ্যে স্কুলের কয়েক জন শিক্ষক হাজির হন। অভিভাবকদের কাছে স্কুলের এসএমএস পৌঁছয়, স্কুলের সম্পত্তি ভাঙা হয়েছে, তাঁদের সমর্থন প্রয়োজন। অভিভাকেরা পৌঁছতেই শুরু হয় বিক্ষোভ। এ দিকে, কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যন্ত্র আটকে রাখার অভিযোগ করেছে ক্যান্টমেন্ট বোর্ড। ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের স্থানীয় প্রতিনিধি তুলিকা গঙ্গোপাধ্যায় অভিভাবকদের সমর্থনে বলেন, ‘‘প্রয়োজনে বোর্ডের অফিস ঘেরাও করব।’’
স্কুলের ডিন অমৃতা আইজ্যাক রায় বলেন, ‘‘এক বছর আগে নোটিস পাঠিয়ে এ ভাবে গুঁড়িয়ে ফেলা যায়? স্কুলে আইসিএসই বোর্ডের পরীক্ষা চলছে। অথচ যাতায়াতের পথ নেই। কী ভাবে পড়ুয়ারা ঢুকবে?’’ একই প্রশ্ন, আইসিএসই স্কুল সংগঠনের সভাপতি সুজয় বিশ্বাসেরও।
ব্যারাকপুরের মহকুমা শাসক পীযূষ গোস্বামী বলেন, ‘‘বেআইনি কিছু হয়নি। নোটিস পাঠানো হয়েছিল। তা ছাড়া স্কুল তো ভাঙা পড়েনি! পড়ুয়াদের ঢুকতে সমস্যা হলে, স্কুল না পারলে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড পরিষ্কার করে দেবে।’’