বস্তিতে আগুন, অভিযুক্ত প্রোমোটার

শুক্রবার গভীর রাতের ওই অগ্নিকাণ্ডে বস্তির একটি ঘর ও দু’টি দোকান পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে যায়। দমকল ঠিক সময়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলেই আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৫১
Share:

ছাই হয়ে গিয়েছে সর্বস্ব। শনিবার, খানপুর রোডে। —নিজস্ব চিত্র।

এক জন পথচারীর চিৎকারে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল সকলের। ঘুম থেকে উঠে তাঁরা দেখতে পেয়েছিলেন, দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। তার পরেই ছুটোছুটি পড়ে যায় টালিগঞ্জের ১৬ নম্বর খানপুর রোড বস্তিতে।

Advertisement

শুক্রবার গভীর রাতের ওই অগ্নিকাণ্ডে বস্তির একটি ঘর ও দু’টি দোকান পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে যায়। দমকল ঠিক সময়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলেই আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। পুরো ঘটনার পিছনে স্থানীয় এক প্রোমোটারের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। প্রোমোটারই ওই জায়গা দখলের চেষ্টা করছেন বলে তাঁদের অভিযোগ। যদিও সংশ্লিষ্ট প্রোমোটারের তরফে পুরো অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, শুক্রবার রাত পৌনে ১টা নাগাদ বস্তির বাসিন্দা গীতা প্রসাদের বাড়িতে আগুন লাগে। গীতাদেবী তখন বাড়ি ছিলেন না। অসুস্থতার কারণে গত কয়েক দিন ধরেই তিনি এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকছেন। গীতাদেবী জানান, আগুনে তাঁর জমানো টাকা, প্যান কার্ড, ব্যাঙ্কের বই-সহ প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র পুড়ে গিয়েছে। গীতার বাড়ির পাশেই থাকেন তাঁর ছেলেরা। এক ছেলে শিবু প্রসাদ বলেন, ‘‘টিভি দেখছিলাম। হঠাৎ কেউ চিৎকার করে বলল আগুন লেগেছে। বেরিয়ে দেখি সব জ্বলছে। ভাগ্যিস মা ছিল না।’’

Advertisement

স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই স্থানীয় প্রোমোটার যতন পারেখ তাঁদের ওই এলাকা থেকে তুলতে চাইছিলেন। তাঁর দলবলই ওই অগ্নিকাণ্ডের পিছনে থাকতে পারে। বাসিন্দাদের তরফে প্রোমোটারের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। কী কারণে আগুন লেগেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে দমকল।

যদিও যতন পারেখ পুরো অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘বস্তি সংলগ্ন ওই জায়গা তিনি অনেক আগেই কিনেছিলেন। মিউটেশনও করা হয়েছে। তার পরে ওই জমিতে একটি গেট বসানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু স্থানীয় প্রতিরোধের কারণে সেটা করা যায়নি।’’ যতনবাবুর পাল্টা দাবি, এর আগেও একাধিক বার জঞ্জালে লাগানো আগুন থেকে ওখানে ছোট অগ্নিকাণ্ড হয়েছিল। যতনবাবু বলেন, ‘‘এ দিনের ঘটনা বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’’ যদিও ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাম কাউন্সিলর মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জমির মালিকানা নিয়ে অনেক দিন ধরেই বিতর্ক রয়েছে। প্রোমোটার চক্র অনেক দিন ধরেই সক্রিয় রয়েছে এ ব্যাপারে।’’ ১০ নম্বর বরো চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্তদের খাবার, ত্রিপল দেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন