কর্মী-বিক্ষোভে সায় দিয়ে নতুন বিতর্কে মারজিত

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী ভাবে উপাচার্য-পদের দায়িত্ব নিয়েই নিজেকে সরকারের লোক বলে দাবি করেছিলেন তিনি। এ বার সরাসরি তৃণমূলের কর্মচারী সমিতির আন্দোলনকে সমর্থন করে বিতর্ক বাড়ালেন সুগত মারজিত। কী রকম? বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগে অশিক্ষক কর্মচারীদের পদোন্নতি সংক্রান্ত কাজ শুরু হলেও ইন্টারভিউয়ের মুখেই বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ তা আটকে দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:২৬
Share:

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী ভাবে উপাচার্য-পদের দায়িত্ব নিয়েই নিজেকে সরকারের লোক বলে দাবি করেছিলেন তিনি। এ বার সরাসরি তৃণমূলের কর্মচারী সমিতির আন্দোলনকে সমর্থন করে বিতর্ক বাড়ালেন সুগত মারজিত।

Advertisement

কী রকম? বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগে অশিক্ষক কর্মচারীদের পদোন্নতি সংক্রান্ত কাজ শুরু হলেও ইন্টারভিউয়ের মুখেই বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ তা আটকে দেন। তার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে সিন্ডিকেট হলের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির সদস্যেরা। এ দিন সিন্ডিকেটের বৈঠক শেষে সুগতবাবুকে বিক্ষোভের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি হলে ১০ গুণ বেশি বিক্ষোভ দেখাতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে, যা আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতি চায় না।’’

প্রশ্ন উঠেছে, এক জন উপাচার্য কী ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে হওয়া বিক্ষোভকে অকুণ্ঠ সমর্থন করলেন? দায়িত্ব নিয়েই নিজেকে সরকারের লোক বলে দাবি বিতর্ক তৈরি করেছিলেন তিনি। এ বার একেবারে দলের এক সংগঠনকে সমর্থন কেন?

Advertisement

উপাচার্যের বক্তব্য, কর্মচারীদের প্রতি যে-অন্যায় হয়েছে, তা যথেষ্টই ক্ষোভের। তিনি সেই জায়গায় থাকলে আরও বেশি ক্ষোভ প্রকাশ করতেন। তিনি বলেন, ‘‘বহু বছর পদোন্নতি না-হলে ক্ষোভ হওয়াটাই স্বাভাবিক। কী ভাবে পদোন্নতির কাজটা দ্রুত সেরে ফেলা যায়, সেই চেষ্টাই করছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরেরই কিছু অদৃশ্য ব্যক্তি তা হতে দিচ্ছে না।’’ উপাচার্য জানান, আইন মেনে পদোন্নতি হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়। সব দিক দেখে যখন পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে, সেই সময়েই পুরনো আইন ঘেঁটে তা বাতিলের চেষ্টা চালাচ্ছেন কয়েক জন। অথচ যখন প্রক্রিয়াটি শুরু হচ্ছিল, সেই সময় তাঁরা উচ্চবাচ্য করেননি।

কারা কী ভাবে পদোন্নতির প্রক্রিয়া বাতিলের চেষ্টা করছেন? উপাচার্য কারও নাম করেননি। শুধু বলেন, ‘‘কয়েক জনের কিছু ফাইল লুকিয়ে রেখে দেওয়া হচ্ছে। যখনই পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে, তখনই আইনের কথা বলে তা বন্ধ করে দিচ্ছে কিছু লোক। এ ভাবে সরকার ও কর্তৃপক্ষের মুখ পোড়াতে চাইছে অদৃশ্য শক্তি।’’ কারা সেই অদৃশ্য শক্তি? এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি উপাচার্য।

তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির সভাপতি (কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা)-র সভাপতি মনোজ রায় বলেন, ‘‘পদোন্নতির জন্য ইন্টারভিউয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়েও তা স্থগিত হয়ে গিয়েছে। কেন তা হল, সে প্রশ্ন তুলেই বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে।’’

সুগতবাবু অবশ্য ফোনে বলেন, ‘‘স্থগিত নয়। বলা ভাল, পিছিয়ে গেল। প্রক্রিয়া চালু করে আইনি জটিলতায় যাতে আর থামতে না-হয়, তা নিশ্চিত করতেই সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে দ্রুত ইন্টারভিউ চালু করা হবে।’’

কী বলছেন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়? ‘‘সুগতবাবু তো ভালই কাজ চালাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় চালান উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা। সেখানে কারা অশুভ শক্তি, সেটা তো উপাচার্যকেই খুঁজে বার করতে হবে,’’ বলেছেন পার্থবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন