গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সন্ধের মুখে কসবার লস্করহাট খালপাড়ে ঘোরাফেরা করছিলেন এক মহিলা। কখনও এক কোণে দাঁড়িয়েও পড়ছিলেন। ঘটনাচক্রে তখনই আবার লোডশেডিং। গত কয়েক দিন ধরেই গুজব রটছিল, পাড়ায় নাকি শিশুচোর ঘুরছে। ওই মহিলাকে দেখে স্থানীয়দের সে রকমই মনে হয়। ওই মহিলার কথা না শুনেই, তাঁর উপর চড়াও হন এলাকাবাসীরায়। শুরু হয় মার।
আরও বড় ঘটনা ঘটে যেতে পারত, কিন্তু খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কসবা থানার পুলিশ। মহিলাকে কার্যত গণপিটুনির হাত থেকে উদ্ধার করেন পুলিশকর্মীরা।
গত কয়েক দিন ধরে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। আতঙ্কিত রাজ্যবাসী। লস্করহাটও তার ব্যতিক্রম নয়। শুক্রবার রাতে গুজবের জেরে অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই মহিলাকে আটক করেন বাসিন্দারা। এত লোকজন দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন তিনি। কথা জড়িয়ে যাচ্ছিল। আর তাতেই বিপদ বাড়তে থাকে।
আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর গুজব ছড়ানো হচ্ছে রাজ্যের কিছু জায়গায়, সতর্ক থাকুন, এ সবই মিথ্যে
আরও পড়ুন: পাকিস্তানকে একঘরে করতে কূটনীতির অস্ত্রে জবাব শুরু ভারতের!
পরে জানা যায়, তিনি ওই পাড়ায় ছেলেকে টিউশন থেকে নিতে এসেছিলেন। পড়া শেষ হতে দেরি হওয়ায়, রাস্তায় ঘোরাফেরা করছিলেন। পুলিশ তাঁকে জনতার ভিড় থেকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। বছর তিরিশের ওই মহিলা শান্তিপল্লির বাসিন্দা। মহিলা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তাঁর কথা কেউ শুনতে চায়নি। তাঁকে মারধর করা হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়, চোর সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। মারাও গিয়েছেন অনেকে। পুলিশ ঠিক সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে এ বার কলকাতায় এমন ঘটনা ঘটে যেতে পারত। অল্পের জন্যে রক্ষা পেয়ে ওই মহিলা এখন আতঙ্কিত। ইতিমধ্যেই পুলিশ-প্রশাসনের তরফেও গুজব আটকতে প্রচার চালানো হচ্ছে।
আনন্দবাজারের বক্তব্য, গুজবে কান দেবেন না। গুজব ছড়াবেনও না। ভুয়ো খবর, ছবি এবং ভিডিয়ো শেয়ার করা কিন্তু আইনের চোখে অপরাধ।