হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন হোটেলে গঙ্গাজলে রান্না! হোটেল বন্ধ করল টাস্ক ফোর্স

কিছু দিন ধরেই খাদ্য সুরক্ষা দফতরের কাছে অভিযোগ আসছিল হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন হোটেলগুলিতে খাবার তৈরি করার সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। শুধু তা-ই নয়, বেশির ভাগ হোটেলের কাছেই পুরসভার দেওয়া লাইসেন্সও নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৯ ০৩:০২
Share:

পরিদর্শন: হাওড়া স্টেশন চত্বরে একটি দোকানে টাস্ক ফোর্সের এক সদস্য। বৃহস্পতিবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

গঙ্গার দূষিত জল থেকে তৈরি হচ্ছিল খাবার। সেই জলেই চলছিল বাসনপত্র ধোয়ার কাজ। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাওড়া স্টেশন চত্বরের হোটেলগুলিতে অভিযান চালানোর সময়ে হাওড়া পুরসভা ও বিভিন্ন দফতরকে নিয়ে তৈরি হওয়া ফুড সেফটি টাস্ক ফোর্সের হাতে উঠে এল এমনই তথ্য। এর পরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় একটি হোটেল। এর পাশাপাশি আরও কয়েকটি হোটেলের মালিককে নিয়ম না মেনে ব্যবসা করার অভিযোগে সতর্কও করা হল।

Advertisement

কিছু দিন ধরেই খাদ্য সুরক্ষা দফতরের কাছে অভিযোগ আসছিল হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন হোটেলগুলিতে খাবার তৈরি করার সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। শুধু তা-ই নয়, বেশির ভাগ হোটেলের কাছেই পুরসভার দেওয়া লাইসেন্সও নেই। সেই সব অভিযোগের ভিত্তিতে এ দিন হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন একাধিক হোটেলে হানা দেয় ফুড সেফটি টাস্ক ফোর্স। এই টাস্ক ফোর্সের দলে ছিলেন হাওড়া পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর, রাজ্যের খাদ্য সুরক্ষা দফতর, বৈধ পরিমাপক বিষয়ক ও উপভোক্তা বিষয়ক দফতর, জেলা শিল্প দফতরের আধিকারিকেরা। টাস্ক ফোর্সের দলটি এ দিন হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন গঙ্গার ধারের একাধিক হোটেলে অভিযান চালায়। টাস্ক ফোর্সের কর্তাদের অভিযোগ, অধিকাংশ হোটেলগুলিতে কোনও ফুড লাইসেন্স নেই। এদের প্রায় সকলের বিরুদ্ধেই গ্রিন বেঞ্চে মামলা চলছে। এই হোটেলগুলির পাশাপাশি হাওড়া মাছবাজার সংলগ্ন বেশ কয়েকটি হোটেলেও অভিযান চালানো হয়। সেখাকার হোটেলগুলিতেও নানা অনিয়ম ধরা পড়েছে বলে জানা গিয়েছে।

জেলা খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিক বিশ্বজিৎ মান্না এ দিন বলেন, “হাওড়া স্টেশনের উল্টো দিকে গঙ্গার পাড়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন, দীর্ঘদিন ধরে লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা করা-সহ নানা অভিযোগ আসছিল। জানা গিয়েছিল, এই সব হোটেলগুলি কোনও স্বাস্থ্যবিধিই মানে না। তাই এ দিন এই অভিযান করা হয়।’’ বিশ্বজিৎবাবু জানান, ছ’টি দফতরকে নিয়ে তৈরি হওয়া এই টাস্ক ফোর্স নির্দিষ্ট সময় অন্তর অভিযান চালাবে। যাঁরা নিয়ম বহির্ভূত ভাবে হোটেল চালাবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

হাওড়া পুরসভার কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ জানিয়েছেন, পুরসভায় এত দিন ফুড সেফটি অফিসার ছিলেন না। এখন নিয়োগ করা হয়েছে। সেই জন্য বিভিন্ন দফতরকে নিয়ে একটি পরিকল্পনা করা হয়েছে। তার মাথায় রয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সেই অনুযায়ী এ দিন থেকে তাদের অভিযান শুরু হয়েছে। মাঝেমধ্যেই এই ধরনের অভিযান করা হবে। এ দিন হোটেল থেকে সংগ্রহ করা খাবার স্বাস্থ্য দফতরের ফুড টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে। যদি কোনও রকম অসঙ্গতি পাওয়া যায়, তা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ দিন প্রায় ২৫টি হোটেলে এই টাস্ক ফোর্স হানা দেয় বলে জানিয়েছেন পুর কমিশনার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন