ফের আন্দোলনমুখী ট্যাক্সি, হুমকি নবান্ন-অভিযানের

উৎসবের মরসুম শেষ। ফের রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন তীব্র করার সিদ্ধান্ত নিলেন ট্যাক্সিচালকেরা। যার জেরে শহরে ফের ট্যাক্সি নিয়ে দুর্ভোগ পোহানোর সম্ভাবনা দেখা দিল নিত্যযাত্রীদের। তবে এ বার অবশ্য ধর্মঘটে যাচ্ছেন না ট্যাক্সিমালিকেরা। রাজ্য সরকার তাঁদের দাবিদাওয়া না মানলে নভেম্বরের মাঝামাঝি সরকারের সদর দফতর ‘নবান্ন’ অভিযানে যাওয়ার হুমকি দিলেন ট্যাক্সিচালকেরা। যা শুনে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের বক্তব্য, “যাঁরা এ কথা বলছেন, তাঁরা যেন মনে রাখেন, এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নবান্নতেই বসেন।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৩৪
Share:

উৎসবের মরসুম শেষ। ফের রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন তীব্র করার সিদ্ধান্ত নিলেন ট্যাক্সিচালকেরা। যার জেরে শহরে ফের ট্যাক্সি নিয়ে দুর্ভোগ পোহানোর সম্ভাবনা দেখা দিল নিত্যযাত্রীদের। তবে এ বার অবশ্য ধর্মঘটে যাচ্ছেন না ট্যাক্সিমালিকেরা। রাজ্য সরকার তাঁদের দাবিদাওয়া না মানলে নভেম্বরের মাঝামাঝি সরকারের সদর দফতর ‘নবান্ন’ অভিযানে যাওয়ার হুমকি দিলেন ট্যাক্সিচালকেরা। যা শুনে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের বক্তব্য, “যাঁরা এ কথা বলছেন, তাঁরা যেন মনে রাখেন, এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নবান্নতেই বসেন।”

Advertisement

ভাড়া বৃদ্ধি-সহ পুলিশি জুলুম বন্ধ, ২৪ জন ট্যাক্সিচালকের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নেওয়ার মতো দাবিতে নভেম্বরে নবান্ন অভিযান করবেন ট্যাক্সিচালকেরা। ওই অভিযানে সিটু, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি, বিএমএস-সহ রাজ্যের প্রতিটি বিরোধী শ্রমিক সংগঠন সামিল হবে বলে জানান ট্যাক্সি-নেতারা। পাশাপাশি, নবান্ন অভিযানে যাতে ট্যাক্সিমালিকেরাও সামিল হন, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে শ্রমিক সংগঠনগুলির সূত্রের খবর। সম্প্রতি বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) নেতা বিমল গুহর সঙ্গে নেতাজি ইন্ডোরে ট্যাক্সিচালকদের একটি অনুষ্ঠানে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন পরিবহণমন্ত্রী। তার পর থেকে বিটিএ-র সঙ্গে পরিবহণমন্ত্রীর সম্পর্কের অবনতি হয়েছে বলে দাবি ট্যাক্সি ইউনিয়নের নেতাদের। সেই কারণে নবান্ন অভিযানে বিটিএ সামিল হওয়ার ব্যাপারেও আশাবাদী ট্যাক্সিচালকেরা।

হাওড়ায় পুলিশি জুলুমের প্রতিবাদে নভেম্বরের শুরুতে আন্দোলনে নামার কথা ঘোষণা করেছে বিটিএ। পরে ট্যাক্সিচালকদের আন্দোলনেও তাঁরা সামিল হতে পারেন বলে জানিয়েছেন বিটিএ-র সভাপতি বিমল গুহ। তিনি বলেন, “আমরা মুকুল রায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তিনি আমাদের দাবিদাওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলে কথা দিয়েছেন। কিন্তু এর মধ্যে তা নিয়ে সরকার কোনও পদক্ষেপ না করলে আমরাও ট্যাক্সিচালকদের নবান্ন অভিযানে সামিল হব।”

Advertisement

সিটু নেতা অনাদি সাহু বলেন, “ট্যাক্সিচালকদের দাবিদাওয়া নিয়ে সরকার উদাসীন। পরিবহণমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই। তাই আমরা নভেম্বরের মাঝামাঝি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নবান্নে বিক্ষোভ দেখাতে যাব। সরকার দাবি না মানলে আমাদের আন্দোলন আরও তীব্র হবে।”

গত ৭ অগস্ট থেকে পুলিশি জুলুমের প্রতিবাদে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন ট্যাক্সিচালকেরা। কয়েক দফায় সমাবেশ, আইন অমান্য কিংবা মিছিল করেছেন তাঁরা। কর্মসূচিতে যোগ দিতে ওই সব দিনে তাঁরা ট্যাক্সি বার করেননি। শেষে গত ১৮ সেপ্টেম্বর লাগাতার ধর্মঘটে যান তাঁরা। এর পরে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী ট্যাক্সিচালকদের উৎসবের মরসুমে ধর্মঘট তুলে নিতে অনুরোধ করেন। তাতেই কালীপুজো অবধি ধর্মঘট স্থগিত রাখা হয়। সে সময়েই ট্যাক্সিচালকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে সরকার ইতিবাচক পদক্ষেপ না করলে উৎসব শেষে ফের আন্দোলন হবে।

কালীপুজো শেষ হতেই ওই আন্দোলনের অঙ্গ হিসেবে সোমবার হাওড়া স্টেশনে পুলিশি জুলুমের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ট্যাক্সিচালকেরা। তাঁদের বক্তব্য, হাওড়া স্টেশনে পুলিশি জুলুম দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। বারবার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। একই ভাবে আগামী ৩১ অক্টোবর লালবাজারে পুলিশি জুলুমের প্রতিবাদে স্মারকলিপি দেবেন সিটুর ট্যাক্সি সংগঠনের নেতারা। সিটু নেতা সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “যাত্রী প্রত্যাখ্যান করলে শুনানির ভিত্তিতে জরিমানা করা হবে বলে কথা দিলেও পুলিশ তার তোয়াক্কা করছে না। তিন হাজার টাকা করেই জরিমানা করা হচ্ছে। কলকাতা পুলিশের জুলুমও বেড়েই চলেছে। আমরা প্রথমে স্মারকলিপি দিচ্ছি। দাবি না মানলে ফের পথে নামব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন