এত দিন অভিযোগ ছিল মদত দেওয়ার। এ বার সরাসরি বিবাদে জড়ালেন চারুচন্দ্র কলেজের শিক্ষকদের দুই পক্ষ।
এর জেরে মেয়াদ শেষ হলেও জানুয়ারির পরিচালন সমিতির বৈঠকে নতুন করে ইন্টারন্যাল কোয়ালিটি অ্যাশিওরেন্স সেল (আইকিউএসি) গঠন করা গেল না চারুচন্দ্র কলেজে।
এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশিকা মেনে দ্রুত আইকিউএসি গঠন হওয়ার কথা ওই কলেজে।
ছাত্র তাণ্ডব এবং বহিরাগতদের হাতে শিক্ষক নিগ্রহের অভিযোগে একাধিক বার খবরের শিরোনামে এসেছে দক্ষিণ কলকাতার চারুচন্দ্র কলেজ। ওই সব ঘটনায় মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ওই কলেজেরই শিক্ষকদের একাংশের বিরুদ্ধে।
শিক্ষা মহলের দাবি, কলেজের মানোন্নয়ন আইকিউএসি কমিটির উপরে নির্ভরশীল। ইউজিসি-র নির্দেশিকা মেনে প্রতি কলেজে ওই কমিটি গঠন বাধ্যতামূলক। দু’বছর অন্তর তৈরি হয় কমিটি। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী তার বদলও হতে পারে। ‘ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের (নাক) কাছে কলেজ সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পদোন্নতি সংক্রান্ত বিষয়েও কাজ করে ওই কমিটি। এখন শিক্ষকদের নিজেদের বিবাদে কমিটি গঠন আটকে থাকলে আদতে তাঁদেরই ক্ষতি হবে বলে মনে করছেন পড়ুয়ারা। ওই কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক অর্ণব বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্যারদের ঝামেলায় পিছিয়ে পড়ছি আমরা। আইকিউএসি কমিটি ভাল কাজ করেছিল বলেই এ বার নাকে ভাল গ্রেড পেয়েছি।’’
সূত্রের খবর, গত ১৩ জানুয়ারি চারুচন্দ্র কলেজে আইকিউএসি কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। তার ভিত্তিতে নতুন কমিটি তৈরির প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছিল। গত ১৯ জানুয়ারি কলেজে পরিচালন সমিতির বৈঠকে নতুন কমিটির সদস্যদের নাম প্রস্তাব করা হয়। এর পরেই বিরোধিতা করেন শিক্ষকদের একাংশ। কলেজের অধ্যক্ষ সত্রাজিৎ ঘোষও বেঁকে বসেন। সদস্যদের নাম শুনে তিনি জানান, তাঁর সঙ্গে পরামর্শ না করেই নতুন কমিটি গঠন হয়েছে। বিরোধী শিক্ষকদের দাবি, নতুন কমিটিতে যাঁদের নেওয়া হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশ কলেজে অনিয়মিত। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ফলে ওই বৈঠকে নতুন কমিটি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।
নিয়ম অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট কলেজের এক জন কনভেনার, ছ’জন শিক্ষক এবং শিক্ষাক্ষেত্রের দু’জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বকে নিয়ে আইকিউএসি কমিটি গঠিত হয়। চেয়ারম্যান হিসেবে থাকেন অধ্যক্ষ। কলেজের পরিচালন সমিতির সঙ্গে পরামর্শ করে অধ্যক্ষই সদস্যদের মনোনয়ন করেন। এ বার চারুচন্দ্র কলেজের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ। পরিচালন সমিতির সভাপতি শিবরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় নিজেই কমিটির সদস্যদের নাম ঠিক করেছেন বলে অভিযোগ। এ ব্যাপারে শিবরঞ্জনবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমার কাছে কেউ অভিযোগ জানাননি।
যে হেতু এই কমিটি খুব গুরুত্বপূর্ণ, আমি বলেছি, কোনও শিক্ষককের পছন্দের প্রার্থী থাকলে আমায় বলতে পারেন।’’ সত্রাজিৎবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমার যা জানানোর নির্দিষ্ট জায়গায় জানিয়ে দেব।’’