—প্রতীকী চিত্র।
ঘরের সমস্ত দরজা-জানলা বন্ধ। অনেক বার ডাকার পরেও দরজা খুলছে না বছর সতেরোর মেয়েটি। প্রেমঘটিত সম্পর্ক নিয়ে পরিবারের সঙ্গে গোলমালের পরেই দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল সে। দরজা ভাঙার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন পরিবারের লোকেরা। ‘খারাপ কিছু’ ঘটে গিয়েছে ভেবেই পুলিশকে খবর দেন এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা। খবর পেয়ে বাহিনী নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে দরজা ভাঙে তারা। ঠিক সেই সময়েই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ওই কিশোরী। কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যার ঠিক আগের মুহূর্তে মেয়েটিকে উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, সোমবার বিকেল চারটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে রাজাবাগান থানা এলাকায়। কার্যত মৃত্যুর মুখ থেকে ওই কিশোরীকে ফিরিয়ে আনে পুলিশ। তবে এই ঘটনায় পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। এমনকী, ছবি তুলতেও বাধা দিয়েছে ওই কিশোরী।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে ওই কিশোরীর। তা নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রায়ই গোলমাল হত তার। বাবা-মা তার সঙ্গে ওই বন্ধুর মেলামেশা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এ দিন তা নিয়েই বাড়িতে অশান্তি হয়। বকাবকি করা হয় তাকে। তার জেরেই সে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
প্রতিবেশীদের বক্তব্য, বহু চেষ্টা করেও যখন দরজা ভাঙা যায়নি, তখন পুলিশকে খবর দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। ঠিক সময়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে না পৌঁছলে বড় ক্ষতি হয়ে যেত বলেই মনে করেন তাঁরা। পুলিশ দ্রুত পৌঁছে যাওয়ার ফলেই বাঁচানো সম্ভব হয় ওই কিশোরীকে।
লালবাজারের কর্তারা পুলিশের এই ভূমিকায় খুশি। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করতে পেরে খুশি রাজাবাগান থানার পুলিশকর্মীরাও।
মনোরোগ চিকিৎসকেরা অবশ্য জানাচ্ছেন, পরিবারের উচিত এই সময়ে মানসিক ভাবে ওই কিশোরীর পাশে থাকা। বিশেষ করে, আত্মহননের চেষ্টা বিফল হলে অনেক সময়ে মনের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়। মনোরোগ চিকিৎসক সুজিত সরখেল বলেন, ‘‘আত্মহত্যার চেষ্টার বিষয়টি নিয়ে ওই কিশোরীর সঙ্গে কোনও কথা বলাই উচিত নয়। পাশে থেকে মেয়েটিকে নিরন্তর বুঝিয়ে যাওয়া উচিত। পরিবারের লোকেদের আরও সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে।’’