স্বামীকে বাঁচাতে পুলিশকে আত্মহত্যার হুমকি কিশোরীর

গত রবিবারের ঘটনা। তদন্তকারীরা জানান, নুঙ্গি এলাকার বাসিন্দা ওই নাবালিকাকে তার বাবা জোর করে বিয়ে দিয়েছিলেন। ওই নাবালিকা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

নাবালিকা অবস্থায় বিয়ে করেছে। অভিভাবকেরা অভিযোগ দায়ের করলে স্বামীর গ্রেফতারি অনিবার্য। স্বামীকে বাঁচাতে তাই আত্মহত্যা করে পুলিশকর্মীদের ফাঁসানোর হুমকি দিল সে। তাও আবার সেই হুমকি সে দেয় থানার ওসি-র ঘরে বসেই। এমন ঘটনায় ফাঁপরে পড়ে মহেশতলা থানার পুলিশ।

Advertisement

গত রবিবারের ঘটনা। তদন্তকারীরা জানান, নুঙ্গি এলাকার বাসিন্দা ওই নাবালিকাকে তার বাবা জোর করে বিয়ে দিয়েছিলেন। ওই নাবালিকা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। তার পরে নিজের প্রেমিককে বিয়ে করে। ঘটনাকে ঘিরে নাবালিকার সঙ্গে তার বাবা-মায়ের বিবাদ চরমে ওঠে। নাবালিকার মা মেয়ের প্রেমিক তথা স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে থানায় যান। পাল্টা থানায় গিয়ে ওই নাবালিকা সামগ্রিক ঘটনার জন্য তার বাবা-মাকেই দায়ী করে। এবং তার প্রেমিককে গ্রেফতার করলে সে আত্মহত্যা করে পুলিশকর্মীদের ফাঁসিয়ে দেবে বলে হুমকিও দেয়।

পুলিশ সূত্রে খবর, নাবালিকার বাবা পেশায় রিকশাচালক। তাঁর দাবি, আর্থিক ভাবে দুর্বল হওয়ায় তিনি মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। কিশোরী পুলিশকে জানায়, শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে সে জানতে পারে তার স্বামীর আরও দুই স্ত্রী রয়েছেন। তাই সে তার শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে পালায়।

Advertisement

নাবালিকার অভিযোগ, বাড়ির লোকজন তাকে আগের শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য মারধর করছেন। তদন্তকারী অফিসার নাবালিকার বাবাকে বলেন, ‘‘আপনি অভিযোগ করলে আমরা আপনার মেয়েকে হোমে পাঠিয়ে দেব। আর সে নিজে যে ছেলেটিকে বিয়ে করেছে তাকেও অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হবে।’’ নাবালিকার বাবা অভিযোগ দায়ের করতে চাইলে আর এক তদন্তকারী অফিসার তাঁকে বলেন, ‘‘আপনাকেও তো গ্রেফতার করতে হবে। আপনি নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।’’

থানা সূত্রে খবর, তদন্তকারী অফিসার ও নাবালিকার বাবার মধ্যে কথাবার্তা চলার সময়ে চিৎকার করে ওঠে ওই কিশোরী। সে বলে, ‘‘যদি আমার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়, আর আমাকে হোমে পাঠানো হয়, তা হলে আমি পুলিশ-সহ সবাইকে দায়ী করে আত্মহত্যা করব।’’ নাবালিকার কথায় পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। ওই কিশোরী জানায়, তাকে জোর করে স্কুল ছাড়িয়ে বিয়ে দেওয়া হয়। শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে যাকে সে বিয়ে করছে, সেই যুবকের সঙ্গে তার অনেক দিনের প্রেমের সম্পর্ক। নাবালিকা বলেই প্রথমে সে বিয়ে করেনি। কিন্তু সে যখন দেখে যে ব্যক্তির সঙ্গে বাড়ি থেকে তার বিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁর দুই স্ত্রী রয়েছেন, তখন সে তার প্রেমিকের কাছে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এবং বৃহস্পতিবার তাকে বিয়ে করে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, শেষ পর্যন্ত কোনও পক্ষ কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। ওই কিশোরী ও তার স্বামীর বয়স কম। আইনি জটিলতায় তাদের ভবিষ্যৎ প্রভাবিত হতে পারে। ফলে আইনি পদক্ষেপ করার ক্ষেত্রে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন