থামছে না কান্না, অগ্নিদগ্ধ শিশুর অবস্থা সঙ্কটজনক

উল্টোডাঙায় গরম ভাতের হাঁড়িতে পড়ে দগ্ধ শিশুকন্যার এ ভাবেই দিন কাটছে এসএসকেএম হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শিশুটির অবস্থা খুবই সঙ্কটজনক। দেহের ৬৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। কথা বলার মতো অবস্থাতেই নেই সে। গত শুক্রবার হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর থেকে মা ছাড়া কাউকে কাছেই ঘেঁষতে দেয়নি সে।

Advertisement

নীলোৎপল বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৩৪
Share:

অসহায়: এসএসকেএম হাসপাতালে শিশুটি। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালের বিছানায় তাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শুয়ে থাকতে হচ্ছে এক ভাবে। সামান্য ডান দিক ফিরলেই প্রবল যন্ত্রণায়, চিৎকারে ঘর কাঁপিয়ে দিচ্ছে সে। হাতপাখায় হাওয়া করে, মুখের সামনে খেলনা ধরেও কান্না থামানো যাচ্ছে না। অচেনা মুখ দেখলে চিৎকার বেড়ে যাচ্ছে কয়েক গুণ!

Advertisement

উল্টোডাঙায় গরম ভাতের হাঁড়িতে পড়ে দগ্ধ শিশুকন্যার এ ভাবেই দিন কাটছে এসএসকেএম হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শিশুটির অবস্থা খুবই সঙ্কটজনক। দেহের ৬৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। কথা বলার মতো অবস্থাতেই নেই সে। গত শুক্রবার হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর থেকে মা ছাড়া কাউকে কাছেই ঘেঁষতে দেয়নি সে।

শিশুটির বাবার দাবি, মেয়ে বলেছে, তাকে জোর করে গরম হাঁড়ির উপরে টেনে ফেলে দিয়েছেন ভাড়াটে রাজেশ গুপ্ত এবং তাঁর স্ত্রী সুনু। উল্টোডাঙা থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন শিশুকন্যার বাবা। তার ভিত্তিতে গ্রেফতার হন দুই ভাড়াটে। যদিও পরে তাঁরা জামিন পেয়ে যান। পুলিশও হাসপাতালে গিয়ে শিশুটির সঙ্গে কথা বলতে পারেনি।

Advertisement

বুধবার বিকেলে ১০ নম্বর শয্যায় শিশুটির কাছে যেতেই অচেনা মুখ দেখেই কাঁদতে শুরু করে সে। অনেক কষ্টে তাকে থামিয়ে মা অঞ্জনা ভুঁইয়া বলেন, ‘‘যা জানতে চান, জিজ্ঞাসা করুন। হয়তো বলবে।’’ প্রশ্ন করা হল, ব্যথা পেলে কী করে? কান্না জড়ানো গলায় সে শুধু বলল, ‘‘ধুম পড়ে!’’

এই বয়ানের ভিত্তিতে ঘটনা আন্দাজ করা কার্যত অসম্ভব। তবে শিশুকন্যার বাবা সুষেণ ভুঁইয়া হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘এখন ভুলভাল বলছে। রবিবার সবটা বলেছিল। কী ভাবে ওকে টেনে হাঁড়ির উপরে বসিয়ে দিয়েছে রাজেশ আর ওর বৌ।’’ চিকিৎসকদের দাবি, ‘‘প্রথম থেকেই শিশুটি কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।’’

গোটা ঘটনা নিয়ে ফাঁপরে তদন্তকারীরাও। থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক বললেন, ‘‘শিশুটি কিছু বলতে পারেনি এখনও। ওর শরীর একটু ভাল হলে কথা বলার চেষ্টা করা হবে।’’ হাসপাতালের ঘর থেকে বেরোনোর মুখে শোনা গেল সুষেণ বলছেন, ‘‘তোমার পুতুলটা চাই তো! তাহলে বলো কী হয়েছিল!’’ শিশুর কান্না ততই বেড়ে যায় উত্তরোত্তর!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন