রোনাল্ড রস ফটক ।— নিজস্ব চিত্র
রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বিভিন্ন সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে এসএসকেএম হাসপাতাল চত্বর জুড়ে। পাশাপাশি সংস্কারও হচ্ছে। তবু এখনও অবহেলায় পড়ে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী রোনাল্ড রস স্মারক ফটক।
রোনাল্ড রস কলকাতার পিজি হাসপাতালে বসে আবিষ্কার করেছিলেন ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু প্লাসমোডিয়াম কী ভাবে মশার শরীরের থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে, তার সম্পূর্ণ জীবনচক্র।
রসই প্রথম বুঝেছিলেন ম্যালেরিয়া রোগের কারণ পরজীবী। যার বৈজ্ঞানিক নাম প্লাসমোডিয়াম ভাইভাক্স। একটি অ্যানোফিলিস মশার পেটে প্লাসমোডিয়াম ভাইভাক্স-এর অস্তিত্ব আবিষ্কার করে বুঝতে পারেন যে ম্যালেরিয়ার জীবাণু প্লাসমোডিয়াম ভাইভাক্স হলেও সেটা ছড়ায় অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে। অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়া রোগীকে কামড়ালে রোগীর রক্তে মিশে থাকা প্লাসমোডিয়াম ভাইভাক্স মশার শরীরে ঢুকে বৃদ্ধি পায় এবং গ্যামেটোসাইটে পরিণত হয়ে লালায় মিশে যায়। সেই মশা কোনও সুস্থ মানুষকে কামড়ালে তিনি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। ১৯০২ সালে এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের জন্য রোনাল্ড রস-কে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল দেওয়া হয়।
পিজি থেকে এসএসকেএম। বহিরঙ্গে অনেক বদল হয়েছে। সাম্প্রতিকতম নিদর্শন তিনটি বিশাল ফটক। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের বিপরীতে নতুন তৈরি একটি ফটকের অদূরে একটি স্মারক ফটকের উদ্বোধন করেছিলেন স্বয়ং নোবেলজয়ী রস। পরবর্তী কালে ওই ‘স্মারক ফটক’
এবং রস-এর এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের জায়গাকে ঐতিহ্যবাহী বলে সরকারি ভাবে চিহ্নিত করা হয়। সেটি বহু বছর তালাবন্ধ। গেটের সামনে ঝোপে ভরে গিয়েছে। ফটকে রসের খোদাই করা ছবি ছাড়াও তাঁর এই আবিষ্কারের কথাও খোদাই করা আছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, এই বিষয়গুলি পূর্ত দফতরের দায়িত্ব। এসএসকেএম-এ পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ার অঞ্জন সাহা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি হাসপাতালে নতুন গেট করা হয়েছে। কিন্তু ওই ফটকটির বিষয়ে জানা নেই খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।