বৃষ্টির জল ধরে রেখে পান করে পরিবার

বৃষ্টির জল সঞ্চয় করে তা পান করেন সিকদার পরিবার। প্রায় ১৪ বছর ধরে এই পরিবার বৃষ্টির জলই পান করছেন। ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের ধারে পূর্বালোকের বাসিন্দা এই পরিবারের বছরভর যাবতীয় গৃহস্থলীর কাজও হয় বৃষ্টির জমানো জলে।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:১৯
Share:

বৃষ্টির জল সঞ্চয় করে তা পান করেন সিকদার পরিবার। প্রায় ১৪ বছর ধরে এই পরিবার বৃষ্টির জলই পান করছেন। ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের ধারে পূর্বালোকের বাসিন্দা এই পরিবারের বছরভর যাবতীয় গৃহস্থলীর কাজও হয় বৃষ্টির জমানো জলে।

Advertisement

১৯৯৭ সালে কালিকাপুরের পূর্বালোকে বাড়ি বানিয়ে আসেন সমীররঞ্জন সিকদার। কিন্তু এসে বোঝেন এই এলাকার জলে আয়রনের পরিমাণ বেশি। সমীরবাবুর স্ত্রী শ্রাবণীদেবী সেই সময়ে দেখেন, আশপাশের কেউ কেউ বৃষ্টির জল ধরে ডাল, ভাত রান্না করেন। তিনিও তেমনই শুরু করেন। ধীরে ধীরে বৃষ্টির জল জমিয়ে রান্না, কাপড় কাচা সবই হয় তাতে। এর পরে বৃষ্টির ধরে রাখা জল পান করতেও শুরু করেন তাঁরা।

সমীরবাবুর হিসেবে, এক জনের আট মাসে মোট দু’হাজার লিটার জল লাগে। এর পরে পরিবারের সদস্য পিছু অতিরিক্ত এক হাজার লিটার জলের প্রয়োজন হয়। আট মাসের হিসেব করার কারণ, তার পরেই আবার ঘুরে আসে বর্ষা। তখন নতুন ভাবে জল সঞ্চয় করা যায়।

Advertisement

সিকদার পরিবারের বাড়ি লাগোয়া দু’টি ভূগর্ভস্থ জলাধার আছে। তাতে মোট পাঁচ হাজার লিটার জল ধরে। ছাদে বৃষ্টির জল পড়লে, তা রেনপাইপের মাধ্যমে জলাধারে চলে আসে।

বোস ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সমীরবাবু বলেন, ‘‘আমাদের ল্যাবরেটরিতে বৃষ্টির ধরা জল পরীক্ষা করে দেখেছি, স্বাস্থ্যের পক্ষে হানিকর কিছু এতে থাকে না। জল ধরে রেখে দিয়ে দিন পনেরো পরে তা খেতে শুরু করলে বিস্বাদও লাগে না। পরিচ্ছন্ন জলাধারে রাখলে জল নষ্টও হয় না।’’

শ্রাবণীদেবী জানালেন, কিছুটা বৃষ্টি হয়ে যাওয়ার পরে জল ধরতে হয়। না হলে ছাদের ময়লা চলে আসবে। তিনি বলেন, ‘‘নিম্নচাপের টানা বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি জল ধরা যায়।’’

অধ্যাপনার পাশাপাশি সমীরবাবু বোস ইনস্টিটিউটের গ্রামীণ জৈব প্রযুক্তি প্রোগ্রামের কো-অর্ডিনেটরও। তিনি জানান, এই ভাবে বাড়িতে বৃষ্টির জল সঞ্চয়ের বিষয়টি সফল হওয়ার পরে এই প্রক্রিয়া তিনি পাঁচটি জেলায় চালু করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। এই কর্মসূচিতে কাজ করছেন শ্রাবণীদেবীও। পশ্চিম মেদিনীপুরের আমলাশোল অথবা পুরুলিয়ার মানবাজারের মতো প্রত্যন্ত শুকনো অঞ্চলের অধিবাসীরাও উপকৃত হচ্ছেন বৃষ্টির জল ধরে রেখে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন