শিশু-খুনে তিন জনের যাবজ্জীবন

২০১১ সালের নভেম্বরের সেই ঘটনায় রাকেশ এবং তার দুই সঙ্গীকে যাবজ্জীবন দিল ব্যারাকপুর আদালত। বিচারক মদনমোহন মিশ্র মঙ্গলবার এই রায় দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৮ ০২:৪৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

তাদের বাড়িতেই ভাড়া থাকত সে। ফলে সাত বছরের শুভম চক্রবর্তী নিখোঁজ হওয়ার পরে অন্যদের সঙ্গে খোঁজাখুঁজি করেছিল তাদের ভাড়াটে রাকেশ পাণ্ডে। খবর আনে, দমদমের শুভমকে দেখা গিয়েছে বারাসতে। এরই মধ্যে বাড়িতে ২৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন এসেছিল। শুভমের বাবা টাকা জোগাড় করতে পারায় দু’দিন পরে বারাসত থানা এলাকায় মিলেছিল শিশুটির দেহ।

Advertisement

২০১১ সালের নভেম্বরের সেই ঘটনায় রাকেশ এবং তার দুই সঙ্গীকে যাবজ্জীবন দিল ব্যারাকপুর আদালত। বিচারক মদনমোহন মিশ্র মঙ্গলবার এই রায় দেন। আদালত জানিয়েছে, মুক্তিপণ আদায়ের জন্য রাকেশ এবং তার দুই সঙ্গী বিশ্বজিৎ ঘোষ ও দীপঙ্কর সাহা শুভমকে অপহরণ করে খুন করে বলে প্রমাণিত হয়েছে। বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন জামিন পায়নি তিন অভিযুক্ত।

মামলার সরকারি আইনজীবী তিমির ভট্টাচার্য জানান, দমদমের মধুগড়ে বাড়ি ছিল দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র শুভমের। তার বাবা শুভেন্দু হোসিয়ারি কারখানায় কাজ করতেন। তাঁদের বাড়ির একতলায় ভাড়া থাকত রাকেশের পরিবার। সে সময়ে ফ্ল্যাট তৈরির জন্য বাড়িটি প্রোমোটারকে দেওয়ার কথা চলছিল। রাকেশ শুনেছিল, বাড়ির জন্য কয়েক লক্ষ টাকা পাবেন শুভেন্দুবাবু। পুলিশ জেনেছে, এর পরেই শুভমকে অপহরণের ছক কষে সে। সঙ্গে নেয় পাড়ার দুই যুবক বিশ্বজিৎ ও দীপঙ্করকে। আদালত সূত্রের খবর, ২০১১ সালের ২৬ নভেম্বর শিক্ষকের কাছে পড়ে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয় শুভম। তার খোঁজে বেরোন পরিজনেরা। তাঁদের সঙ্গে বেরোয় রাকেশও। খবর আনে, বারাসত থানার শাসন এলাকায় দেখা গিয়েছে শুভমের মতো দেখতে এক বালককে। পরের দিন সে তার খোঁজে বেরোয়। ইতিমধ্যে শুভেন্দুবাবুর কাছে ২৫ লক্ষ টাকা চেয়ে ফোন আসে। সন্ধ্যায় ফিরে রাকেশ জানায়, শুভমের খবর জোগাড় করতে পারেনি। বাড়ির লোকেরাও টাকা জোগাড় করতে পারেননি।

Advertisement

এর পরেই স্থানীয়েরা রাকেশকে জেরা শুরু করলে সে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে থাকে। শেষে স্বীকার করে, সে-ই শুভমকে অপহরণ করেছে। দমদম থানার পুলিশ প্রথমে রাকেশ, পরে তার দুই সঙ্গীকে গ্রেফতার করে। জেরায় তারা স্বীকার করে, মুক্তিপণ পাবে না বুঝতে পেরেই শ্বাসরোধ করে শুভমকে খুন করেছে। বারাসত থানা দমদম থানাকে জানায়, আমিনপুর ফাঁড়ির খড়িবাড়িতে মাছের ভেড়িতে এক বালকের দেহ মিলেছে। শুভমের বাড়ির লোকজন গিয়ে দেহ শনাক্ত করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন