প্রতীকী ছবি।
প্রৌঢ়ের ত্বকে নতুন জীবন ফিরে পাবেন তিন অগ্নিদগ্ধ।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, এসএসকেএম হাসপাতালে এক প্রৌঢ়ের ত্বকের সাহায্যে ওই তিন জন ফিরবেন স্বাভাবিক জীবনের পথে।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেয়ো রোডে রাস্তা পেরোনোর সময়ে গাড়ির ধাক্কায় আহত হন প্রশান্ত মণ্ডল (৬৭)। এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, তিনি মারা গিয়েছেন। পুলিশ তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। প্রশান্তবাবুর মেয়ে রণিতা পুলিশকে জানান, তিনি বাবার দেহদান করতে ইচ্ছুক। এর পরেই কলকাতা পুলিশ যোগাযোগ করে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে।
পরিবারের অঙ্গদানের ইচ্ছে জেনে স্বাস্থ্য দফতরের সহ-অধিকর্তা অদিতিকিশোর সরকার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে, দুর্ঘটনায় মৃত্যু হওয়ায় প্রশান্তবাবুর দেহ চিকিৎসাবিজ্ঞানে কতটা ব্যবহার করা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কারণ, প্রশান্তবাবুর দেহের ময়না-তদন্ত হবে। কিন্তু পরিবারের ইচ্ছেকে মর্যাদা দিয়ে পুলিশ অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অনুমতি দেয়। মঙ্গলবার রাতে প্রশান্তবাবুর চোখ দু’টি নিয়ে যায় একটি বেসরকারি আই ব্যাঙ্ক। বুধবার সকালে এসএসকেএম হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ ওই প্রৌঢ়ের ত্বক নেয়। চিকিৎসকেরা আশাবাদী, এই ত্বকের সাহায্যে তিন জন অগ্নিদগ্ধ রোগীর অস্ত্রোপচার করা যাবে। অদিতিবাবু বলেন, ‘‘এক জন মানুষের অঙ্গদানের সিদ্ধান্তে আর পাঁচ জনের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা তৈরি হল। দ্রুত সব বিভাগ সহযোগিতা না করলে এই কাজ সম্ভব হতো না।’’
ত্বক বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, মৃত্যুর পরে অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নিতেই অনেক সময় কেটে যায়। তার উপর অঙ্গদানের মতো বিষয়ের সঙ্গে একাধিক সরকারি দফতর যুক্ত থাকে। ফলে পুরো প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে অনেক সময় লাগে। কিন্তু এমন সিদ্ধান্ত দ্রুত হলে অনেক মানুষের উপকার হয়। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে এই ত্বক সংরক্ষিত করা হবে। অগ্নিদগ্ধ রোগীর প্লাস্টিক সার্জারির সময়ে তা ব্যবহার করা হবে। রণিতাদেবী বলেন, ‘‘বাবা আজীবন সকলের পাশে থাকতেন। মৃত্যুর পরেও তিনি অন্যকে সাহায্য করতে পারলেন, এটা ভেবে ভাল লাগছে।’’