বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে আহত তিন

বাইরে ঝুলছে পুরসভার ‘বিপজ্জনক বাড়ি’র নোটিস। মাস কয়েক আগে একাংশ ভেঙেও ফেলা হয়েছে। কিন্তু সেই বিপজ্জনক বাড়ির ভিতরেই বহাল তবিয়তে বাস করছিলেন লোকজন। তারই মাসুল গুনতে হল বুধবার রাতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৭ ০১:৪৭
Share:

পাখা-পোক্ত: ভেঙে পড়েছে ছাদের একাংশ। ঝুলছে শুধু পাখা। বুধবার, রিপন লেনে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

বাইরে ঝুলছে পুরসভার ‘বিপজ্জনক বাড়ি’র নোটিস। মাস কয়েক আগে একাংশ ভেঙেও ফেলা হয়েছে। কিন্তু সেই বিপজ্জনক বাড়ির ভিতরেই বহাল তবিয়তে বাস করছিলেন লোকজন। তারই মাসুল গুনতে হল বুধবার রাতে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, বুধবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ ২৫ রিপন লেনের ওই বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে। আহত হন তিন জন বাসিন্দা। তাঁদের উদ্ধার করে ন্যাশনাল মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। নাজমা খাতুন নামে এক বৃদ্ধা হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর ছেলে আরশাদ আলি ও পুত্রবধূ শবনম বিবিকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

আরশাদ জানান, ঘুমোতে যাওয়ার সময়েই ছাদের একাংশ ভেঙে পড়ে। তিনি এ-ও জানিয়েছেন, সম্প্রতি অন্য একটি অংশ ভেঙে পড়েছিল। প্রশ্ন উঠেছে, বিপজ্জনক জেনেও বসবাস করছিলেন কেন? আরশাদের জবাব, তাঁরা বহু দিন ধরে বাস করছেন। বাড়িওয়ালাকে মেরামত করতে বললেও তিনি করেননি। ‘‘কোথায় যাব? আট বছর ধরে মেরামতির আশ্বাস শুনছি,’’ বলছেন আরশাদ।

Advertisement

ঘটনার পরে কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানান, ওই বাড়িটিকে বিপজ্জনক ঘোষণা করে বাসিন্দাদের একাধিক বার সরে যেতে বলা হয়েছিল। নোটিসও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বাসিন্দারা কান দেননি।

শুধু রিপন লেনের ওই বাড়ি নয়, কলকাতার বহু বিপজ্জনক বাড়িতে বাস করেন লোকজন। ভেঙে বিপত্তি ঘটার পরে তা নিয়ে দিন কয়েক তোলপাড় হয় ঠিকই। কিন্তু তার পরেই সব আগের অবস্থায় ফিরে যায় বলে অভিযোগ। অনেকেরই প্রশ্ন, বিপজ্জনক বাড়ির বাসিন্দাদের কেন জোর করে সরিয়ে দেওয়া হবে না?

পুরসভা সূত্রে খবর, এই সব বাড়িতে বহু দিন ধরে বাসিন্দারা থাকছেন। জোর করে সরাতে গেলে সমস্যা হতে পারে। তাই বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে নতুন আইন হয়েছে। কিন্তু তাতে পুনর্বাসনের প্রকল্প এখনও স্থির করা হয়নি। সে সব হওয়ার পরে তা পুর পরিষদে পাশ করাতে হবে। ফলে আইন তৈরি হলেও তা প্রয়োগের জায়গা এখনও তৈরি হয়নি।

এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে অনেক। ভারী বৃষ্টি হলেই এই বাড়িগুলি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা বাড়ে। আইন হওয়ার পরেও তা প্রয়োগ করা না গেলে বিপদের আশঙ্কা থেকেই যায়। তা হলে কি কলকাতার বিপজ্জনক বা়ড়ির বাসিন্দাদের মাথায় ছাদ ভেঙে পড়াই ভবিতব্য? সদুত্তর মিলছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন