Crime

কলকাতার নামী স্কুলে ৩ শিক্ষিকার যৌন হেনস্থা করলেন প্রধান শিক্ষক!

ঘটনাটি দক্ষিণ কলকাতার একটি নামী স্কুলের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯ ২০:৫২
Share:

যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক! গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হলেন কলকাতার একটি স্কুলের তিন শিক্ষিকা। শিক্ষিকাদের মুখে স্কুলের মধ্যে সহকর্মীর হাতে হেনস্থার কথা শুনে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কলকাতা পুলিশকে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করতে নির্দেশ দিলেন বিচারক।

Advertisement

ঘটনাটি দক্ষিণ কলকাতার একটি নামী স্কুলের। সেখানকার সংস্কৃত, গণিত এবং রসায়নের তিন শিক্ষিকা এই অভিযোগ তুলেছেন। বিচারকের কাছে তাঁরা জানিয়েছেন, এই সমস্যার সমাধান না হলে চাকরিতে ইস্তফা দেওয়া ছাড়া তাঁদের সামনে কোনও রাস্তা খোলা থাকবে না।

অভিযোগকারী এক শিক্ষিকা নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে মঙ্গলবার বলেন, ‘‘২০১০ সাল থেকে আমি ওই স্কুলে চাকরি করছি। ২০১৭ সালে এই প্রধান শিক্ষক কাজে যোগ দেন।” তাঁর অভিযোগ, ‘‘কাজে যোগ দেওয়ার পর থেকেই আমাদের বিভিন্ন ধরনের যৌন ইঙ্গিত পূর্ণ কথা বলা শুরু করেন তিনি।” অন্য এক শিক্ষিকার অভিযোগ, ‘‘প্রথমে আমরা বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তাতে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। ফোনে নানা রকম কুরুচিকর মেসেজ পাঠাতে শুরু করেন প্রধান শিক্ষক।” শিক্ষিকাদের অভিযোগ, এখানেই থেমে থাকেননি ওই ব্যক্তি। তিনি এর পর নিজের ঘরে ডেকে শিক্ষিকাদের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করেন। সোজাসুজি কুপ্রস্তাব দিতে থাকেন এবং তাঁদের স্বামীদের অনুপস্থিতিতে শিক্ষিকাদের নিজের বাড়িতে ডাকা শুরু করেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: ইডি গোয়েন্দা পরিচয় দিয়ে নিউটাউনের রাস্তায় লুঠ বর্ধমানের চাল ব্যবসায়ীকে​

এক শিক্ষিকা বলেন, ‘‘বিষয়টা বাড়াবাড়ি হতেই আমরা পরিচালন সমিতিকে গোটা ঘটনা জানাই। কিন্তু সমিতির সভাপতি শশাঙ্কশেখর ভট্টাচার্য কার্যত সেই অভিযোগে কর্ণপাত করেননি। অভিযোগ, ডিআই-এর দফতরে বার বার অভিযোগ জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। এক শিক্ষিকা বলেন, ‘‘আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করছি জানতে পেরে উল্টে আমাদের শাসানো শুরু করেন প্রধান শিক্ষক।” আদালতে করা পিটিশনে ওই শিক্ষিকারা জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষকের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায়, স্কুলে বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করা শুরু হয় তাঁদের। অভিযোগকারী এক শিক্ষিকা বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষক সব সময়ে রাজনৈতিক স্তরে নিজের ভাল যোগাযোগের কথা বলেন। আমাদের শাসিয়ে বলেন যে, কোনও অভিযোগে কোনও কাজ হবে না।”

আরও পড়ুন: লেকটাউনে বাইকবাহিনীর তাণ্ডব, তৃণমূল কার্যালয়ে ভাঙচুর​

শিক্ষিকাদের দাবি, তাঁরা সেই কারণে ভয়ে থানাতে কোনও অভিযোগ জানাতে সাহস পাননি। সোজা আলিপুর আদালতে অভিযোগ জানান। সেখানকার দ্বিতীয় বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায় মামলাটি শোনার সময় অভিযোগকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। আদালত শিক্ষিকাদের বয়ান রেকর্ড করে। তাঁদের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আদালত গোটা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে শুনেছে। তার পরেই রবীন্দ্র সরোবর থানাকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে।” তিনি বলেন, ‘‘এটা আশ্চর্যজনক যে, ওই স্কুলে মহিলা কর্মীদের জন্য কোনও বিশাখা কমিটি নেই। আমরা এই বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে যাব।”

ওই প্রধান শিক্ষককে এ দিন বেশ কয়েক বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। তাঁকে মেসেজ করা হলেও, তিনি কোনও জবাব দেননি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন