—প্রতীকী চিত্র।
গভীর রাতে নিউ টাউনের রাস্তায় রুদ্ধশ্বাস নাটক। ঠিক যেমন সিনেমায় হয়। হোয়াটসঅ্যাপের সাহায্যে পুলিশের হেফাজতে থাকা বন্ধুর অবস্থান জানতে পেরে তাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করল তিন যুবক। সেই কাজে নেমে পুলিশকে মারধর করতেও তারা পিছপা হয়নি বলে অভিযোগ। বুধবার রাতের এই ঘটনায় অভিযুক্ত যুবকদের গ্রেফতার করেছে নিউ টাউন থানার পুলিশ।
বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় নিউ টাউনের বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ কানুনগো এবং আরও এক জনকে খুঁজছিল হরিদেবপুর থানার পুলিশ। যার প্রেক্ষিতে বুধবার রাতে ইন্দ্রজিৎকে পাকড়াও করতে হরিদেবপুর এবং নিউ টাউন থানার পুলিশ যৌথ অভিযানে নামে। পুলিশ সূত্রের খবর, ইন্দ্রজিৎকে নিউ টাউন থেকে ধরার পরে নিউ টাউনের গীতাঞ্জলি পার্কের কাছে উড়ালপুলের উপরে আর এক জন অভিযুক্তকে ধরার জন্য ওঁত পেতেছিল দুই থানার পুলিশ। তদন্তকারীরা ইন্দ্রজিৎকে বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় আর এক অভিযুক্তকে সেখানে ফোন করে ডাকতে। পুলিশ সূত্রের খবর, এরই মধ্যে নয়াবাদ থেকে দামি
গাড়ি চালিয়ে সেখানে হাজির হয় ইন্দ্রজিতের তিন বন্ধু। গাড়ি থেকে নেমে পুলিশের সঙ্গে তারা বচসা জুড়ে দেয়। কী কারণে ইন্দ্রিজৎকে ধরা হয়েছে, তা জানার পরেও কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের গায়ে হাত দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, দুই থানার সাত-আট জন পুলিশকর্মী অভিযানে ছিলেন। প্রাথমিক আকস্মিকতা কাটিয়ে নিউ টাউন থানার অফিসারেরা ওই তিন যুবককে বাগে আনতে সক্ষম হন। এর পরে তাদের গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের দাবি, নয়াবাদের বাসিন্দা শতরূপ চৌধুরী, গৌরব সাহু এবং সুমন ঘোষ নামে ওই তিন যুবকের প্রত্যেকেই সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য। পুলিশ সূত্রের খবর, তিন জনের মধ্যে এক জনের বাবা সেনাবাহিনীতে উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন।
কিন্তু ইন্দ্রজিৎকে নিয়ে পুলিশ কোথায় অপেক্ষা করছে, তা তার বন্ধুরা জানল কী ভাবে?
পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তকারীরা যখন ইন্দ্রজিৎকে বলেন ফোনে অন্য অভিযুক্তকে ডাকতে, তখনই হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বার্তা চলে গিয়েছিল তার বন্ধুদের কাছে। এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘সম্ভবত হোয়াটসঅ্যাপে সে বাকিদের লিখেছিল, আমাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তোরা আয়। সেই সঙ্গে নিজের অবস্থানও পাঠিয়েছিল।’’ তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
এ দিকে, যার জন্য ওই জায়গায় দাঁড়িয়েছিল পুলিশ, সেই অভিযুক্তের এখনও খোঁজ মেলেনি। পুলিশ জানিয়েছে, ইন্দ্রজিৎ ডাকালেও সে ওই জায়গায় আসেনি। তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। a