Tiljala Murder

তিলজলায় অশান্তি বাড়ছে, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, শিশু খুনের জেরে রাস্তা ও রেল অবরোধ

তিলজলা শিশুহত্যাকাণ্ডে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করছেন বিক্ষোভকারীরা। রবিবার রাতেও থানায় বিক্ষোভ চলেছে। পুলিশ তৎপরতা দেখালে শিশুটিকে বাঁচানো যেত বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৩ ১৩:৪৫
Share:

বুকে পোস্টার লাগিয়ে এবং চিৎকার করে স্লোগান দিতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। নিজস্ব চিত্র।

তিলজলা এলাকায় নাবালিকা মৃত্যুর ঘটনার জেরে রেল অবরোধ বালিগঞ্জ স্টেশনে। রাস্তা ছেড়ে এ বার ট্রেন আটকে অবরোধে শামিল হলেন তিলজলার স্থানীয়রা। অবরোধে নেমে পুলিশের গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। রেল অবরোধের কারণে ব্যহত শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ট্রেন চলাচল। বিক্ষোভকারীদের দাবি, রবিবার রাতে তিলজলা থানা এলাকায় ভাঙচুরের অভিযোগে আটক তিন স্থানীয়কে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। স্থানীয় সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়া তিন জনের মধ্যে এক জন মহিলাও রয়েছেন। স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে ওই তিন স্থানীয়কে মুক্তি দিতে হবে। যত ক্ষণ না ওই তিন স্থানীয়কে ছেড়ে দেওয়া হবে, তত ক্ষণ এই অবরোধ চলবে বলেও হুমকি দিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা। পাশাপাশি, অভিযুক্ত অলোক কুমারকেও তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ারও দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা।

Advertisement

এর আগে সোমবার সকালে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখান তিলজলার স্থানীয় বাসিন্দারা। নিহত শিশুর পরিবারের সদস্যেরা ছাড়াও রয়েছেন বহু স্থানীয় মানুষ। পিকনিক গার্ডেন-হাওড়া রুটের একটি বাস আটকে সেটির ছাদে চেপে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। বুকে পোস্টার লাগিয়ে এবং চিৎকার করে স্লোগান দিতেও দেখা যায় তাঁদের। অনেকেই রাস্তায় বসে পড়ে প্রতিবাদে শামিল হন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, শিশুরমৃত্যুতে দায়ীরা যত ক্ষণ না উপযুক্ত শাস্তি পাবে তত ক্ষণ তাঁরা লাগাতার প্রতিবাদ করতে থাকবেন।

পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা। রবিবার রাতেও তিলজলা থানায় বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন স্থানীয়রা। অভিযোগ, রবিবার সকাল থেকে শিশুটিকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে থানায় অভিযোগ জানালেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। পুলিশ তৎপরতা দেখালে শিশুটিকে বাঁচানো যেত বলেও দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। রবিবার রাতে তিলজলা থানা লক্ষ্য করে পাটকেলও ছোড়ে উত্তেজিত জনতা। পুলিশ এলাকা খালি করার জন্য লাঠি নিয়ে বেরোলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তখনই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তিন স্থানীয়।

Advertisement

পুলিশের দাবি, রবিবার বেলা ১২টা নাগাদ অভিযোগ পাওয়ার পরই শিশুর খোঁজ শুরু হয়। মূল অভিযুক্তের আবাসনের ৩২টি ফ্ল্যাটে শিশুর খোঁজে চিরুনি তল্লাশি চালায় তারা। অলোকের ফ্ল্যাটটি বাইরে থেকে বন্ধ ছিল। সন্ধ্যায় সেখান থেকেই শিশুর দেহ উদ্ধার করা হয়।

তিলজলায় শিশু খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত অলোক কুমারকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, সন্তান লাভের আশায় তান্ত্রিকের কথা শুনে ওই সাত বছরের শিশুকে খুন করেছেন নিঃসন্তান আলোক। সূত্রের খবর, পুলিশি জেরায় অভিযুক্ত নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই তান্ত্রিককে ধরতেও বিহারে কলকাতা পুলিশের একটি দল পাঠানো হতে পারে।

প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, সাত বছরের শিশুকে স্ক্রু ড্রাইভার জাতীয় কিছু দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করার পর তার হাত পা বেঁধে বস্তার ভিতর ফেলে রাখা হয়েছিল। মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যেরা জানিয়েছেন, রবিবার সকালে শিশুটিকে ফ্ল্যাটের নীচে আবর্জনা ফেলার জন্য পাঠানো হয়েছিল। তার পর সে আর ঘরে ফেরেনি। অনুমান, উপরে ওঠার আগেই তাকে ঘরে টেনে নেন দোতলার ফ্ল্যাটের বাসিন্দা অলোক। তার পর ঘরের ভিতর তাঁর উপর নির্যাতন চালানো হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন