কাঠগড়ায় রেল

যাত্রী-সুরক্ষায় কত ফাঁক, দেখাল টিটাগড়

ট্রেনে যাত্রী-নিরাপত্তার বিষয়টি যে এখনও উপেক্ষিতই, তা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল মঙ্গলবার ভোরে টিটাগড় স্টেশনে ট্রেনে বোমা ফাটার ঘটনা। যাত্রীদের প্রশ্ন, শিয়ালদহ, দমদম বা ব্যারাকপুরের মতো স্টেশন থেকে অনায়াসেই যদি বোমা নিয়ে ট্রেনে ওঠা যায়, তবে তাঁদের নিরাপত্তা কোথায়? তাঁদের দাবি, অবিলম্বে কোথাও একটা লাগাম টানা প্রয়োজন। শিয়ালদহ মেন লাইনের নিত্যযাত্রীদের অনেককেই এ দিন বলতে শোনা গিয়েছে— চুরি-ছিনতাই ছিলই, তার উপরে এখন শুরু হয়েছে ট্রেনের মধ্যে বোমা-গুলির উপদ্রব।

Advertisement

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৫ ০২:৫৫
Share:

ট্রেনে যাত্রী-নিরাপত্তার বিষয়টি যে এখনও উপেক্ষিতই, তা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল মঙ্গলবার ভোরে টিটাগড় স্টেশনে ট্রেনে বোমা ফাটার ঘটনা।

Advertisement

যাত্রীদের প্রশ্ন, শিয়ালদহ, দমদম বা ব্যারাকপুরের মতো স্টেশন থেকে অনায়াসেই যদি বোমা নিয়ে ট্রেনে ওঠা যায়, তবে তাঁদের নিরাপত্তা কোথায়? তাঁদের দাবি, অবিলম্বে কোথাও একটা লাগাম টানা প্রয়োজন। শিয়ালদহ মেন লাইনের নিত্যযাত্রীদের অনেককেই এ দিন বলতে শোনা গিয়েছে— চুরি-ছিনতাই ছিলই, তার উপরে এখন শুরু হয়েছে ট্রেনের মধ্যে বোমা-গুলির উপদ্রব। সব মিলিয়ে রেলপথ এখন দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্য। দিনে-রাতে কোনও সময়েই এখন আর নিরাপদ থাকছেন না লক্ষ লক্ষ যাত্রী। সব সময়েই প্রাণ হাতে যাতায়াত। যাত্রীদের অভিযোগ, বছর বছর যাত্রী-সুরক্ষায় নানা প্রস্তাব নেওয়া হয়। সবই থেকে যায় স্রেফ কাগজে-কলমে।

গত কয়েক বছরে যাত্রী বেড়েছে কয়েক গুণ। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ট্রেনের সংখ্যাও। কিন্তু সেই অনুপাতে নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যা বাড়েনি। ফলে যা হওয়ার তা-ই হয়েছে এ দিন। টিটাগড়ের ঘটনাকে রেল কর্তৃপক্ষ একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখাতে চাইলেও যাত্রীরা কিন্তু অন্য কথা বলছেন। তাঁদের অভিযোগ, কোনও সময়ে ট্রেনে ন্যূনতম পাহারাও চোখে পড়ে না। ফলে দুষ্কৃতীরা অবাধে যাতায়াত করে। এ দিনের ঘটনা তারই প্রতিফলন।

Advertisement

এ দিন ভোরে টিটাগড়ে কৃষ্ণনগরগামী একটি আপ ট্রেনের মধ্যে দুই দুষ্কৃতীর লড়াইয়ের সময়ে বোমা ফেটে জখম হন সাত জন যাত্রী। ভয়ে ট্রেন থেকে বাইরে ঝাঁপ দিয়ে আহত হন আরও ১২ জন। এই ঘটনার পরে রেল মন্ত্রকও বুঝতে পারছে, ভোরের ট্রেনটিতে নজরদারির জন্য রেল পুলিশের কোনও কর্মী ছিলেন না।

গভীর রাত বা ভোরের ট্রেনগুলিতে দীর্ঘ সময় ধরে রেল পুলিশের জন্য দরবার করে আসছেন যাত্রীরা। ওই দাবির যৌক্তিকতা স্বীকার করে রেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘বোমা ফাটার এমন ঘটনা ব্যতিক্রম হলেও ভোর বা রাতের ট্রেনে একাধিক চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা মন্ত্রকের নজরে এসেছে। এই ছবি বদলাতে শিয়ালদহ উত্তর ও দক্ষিণ শাখায় রেল পুলিশের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে ভাবছে মন্ত্রক।

তবে অন্য বারের মতো এ বার অবশ্য আইনশৃঙ্খলা দেখার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের বলে পাশ কাটায়নি রেল প্রশাসন। এ দিন নিজেরাই ময়দানে নেমে যাত্রী-সুরক্ষার বিষয়টি নতুন করে খতিয়ে দেখেন তাঁরা। এ দিন পদস্থ কর্তাদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার। ট্রেনটিকে যেখানে রাখা হয়েছে, সেই কারশেডেও যান তিনি। পরে রেলকর্তাদের ডেকে যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন