ব্রিগেডের সভাস্থলে স্নাইপারদের নজরদারি ‘দ্য ৪২’ থেকে।—নিজস্ব চিত্র।
খোলা মঞ্চ। গোটা পূর্ব দিকটাতেই পর পর সারি দিয়ে বহুতল। আর মঞ্চের উপর গোটা দেশের প্রথম সারির নেতারা।প্রায় সকলেরই জেড প্লাস নিরাপত্তা। একটা সামান্য ভুলেই ঘটে যেতে পারে মারাত্মক ঘটনা। প্রথম থেকেই ব্রিগেডের এই খোলা মঞ্চে এত জন ভিভিআইপি সমাবেশ নিয়ে বার বার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গোয়েন্দারা। এমনকি, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারাও বার বার আপত্তি তুলেছিলেন নিরাপত্তার কথা ভেবে। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর জেদের কাছে হার মানতে হয় গোয়েন্দাদের।
মঞ্চে থাকা নেতৃত্ব বা তাঁদের সভাস্থলে আসা যাওয়ার পথে যাতে কোনও হামলা না হয় তার জন্য কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন বাহিনী, কমান্ডোরা মজুত থাকলেও বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয় স্পেশ্যাল ফোর্সের স্নাইপার বাহিনীকে।
শুক্রবার বিকেল থেকেই সভাস্থলের আশপাশের সমস্ত বহুতলের দখল নেয় স্পেশ্যাল ফোর্স। তাঁদের পরিভাষায় ‘ডমিনেশন’, যাতে কোনও বহুতল থেকে কোনও হামলা না হতে পারে। এর পর সমস্ত বহুতল ঘুরে স্ট্র্যাটেজিক্যাল তিনটি বহুতলে মোতায়েন করা হয় তিনটি বিশেষজ্ঞ স্নাইপার ইউনিট।
ব্রিগেডের মঞ্চে রাজনৈতিক নেতারা।—নিজস্ব চিত্র।
আরও পড়ুন: হার্দিক থেকে অখিলেশ, ভিড় দেখে উচ্ছ্বসিত প্রত্যেকে, ব্রিগেড থেকে হুঙ্কার বিরোধী ঐক্যের
আরও পড়ুন: ২০১৯-এ নতুন প্রধানমন্ত্রী দেখবে ভারত: চন্দ্রবাবু নাইডু
সূত্রের খবর, ওই তল্লাটের সবচেয়ে উঁচু বাড়ি ‘দ্য ৪২’-তে একটি ইউনিট ঘাঁটি গাড়ে। বাকি দু’টি স্নাইপার ইউনিট দখল নেয় দু’টি বহুতলের উপর। স্পেশ্যাল ফোর্সের প্রতিটি স্নাইপার ইউনিটে এদিন ছিলেন তিনজন করে সদস্য।
আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী, পিএসজি আলফা-১ স্নাইপার রাইফেল অত্যন্ত আধুনিক। এই একই রাইফেল ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডের স্নাইপার বাহিনীও ব্যবহার করে থাকে। সেই স্নাইপার রাইফেল নিয়ে স্নাইপার শুটার ছাড়াও প্রতিটি ইউনিটে ছিলেন আরও দু’জন। একজন দলনেতা। যাঁর কাছে ছিল লেজার রেঞ্জ ফাইন্ডার (এলআরএফ)। তাঁর কাজ মঞ্চ এবং সভাস্থলে নজর রাখা। সেখানে কোনও সন্দেহজনক গতিবিধি থাকলে তা আরও ভালভাবে দেখা। এলআরএফ দিয়ে সেই টার্গেটের দূরত্ব বোঝা যায়। সেই দলনেতা তখন সতর্ক করেন দলের দ্বিতীয় সদস্য স্পটারকে। তাঁর হাতে রয়েছে স্পটারস্কোপ। একনলা এই দূরবীনের মতো যন্ত্র দিয়ে নিশানার দূরত্ব, উচ্চতা, বাতাসের গতি মাপা যায়। সেই অনুসারে স্পটার তথ্য দেন শুটার বা স্নাইপারকে। এর পর দলনেতা সিদ্ধান্ত নেন আদৌ সেই টার্গেটকে গুলি করা হবে কি না।নির্দেশ পেলে সঙ্গে সঙ্গে স্নাইপার গুলি চালায়। সেই গুলি কোথায় গেল, টার্গেটের লাগল কিনা তা স্পটার দেখেন বুলেটের বাস্পীয় রেখা দেখে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন ওই স্নাইপার বাহিনীর নজরদারিই ছিল শীর্ষনেতাদের নিরাপত্তার শেষ পাঁচিল। এই বাহিনী এনএসজি-র কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে।