শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর ধুন্ধুমার বিদ্যাসাগর কলেজে

শাসক দলের দুই ছাত্র গোষ্ঠীর মারামারিতে দেদার ভাঙচুর চলল কলেজে। পুলিশ জানিয়েছে, গত শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:১৭
Share:

ছবি: সংগৃহীত

জয়পুরিয়া, চারুচন্দ্রের তালিকায় নাম লেখাল বিদ্যাসাগর কলেজও!

Advertisement

শাসক দলের দুই ছাত্র গোষ্ঠীর মারামারিতে দেদার ভাঙচুর চলল কলেজে। পুলিশ জানিয়েছে, গত শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কলেজের দুই প্রাক্তন ছাত্রের দাদাগিরির জেরে কলেজে ধুন্ধুমার বাধে বলে অভিযোগ। ইউনিয়ন রুমের পাশাপাশি কলেজের টিভি, ল্যাপটপ, চেয়ার, টেবিল ভাঙচুর করা হয়। লাঠি, উইকেট এবং ব্যাট নিয়ে দু’পক্ষের মারামারিতে রক্তাক্ত হন চার ছাত্র। ঘটনায় দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
তবে সোমবার পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলেজের কর্তৃত্ব কার হাতে থাকবে এ নিয়েই গোলমাল শুরু হয় দুই প্রাক্তন ছাত্র মিঠুন যাদব এবং অমিত ঘোষের গোষ্ঠীর মধ্যে। অতীতে এরা এক সঙ্গেই কলেজের ছাত্র সংগঠনের দায়িত্ব সামলাতেন। কিন্তু সম্প্রতি এরা পৃথক হয়ে গিয়েছেন। দিবা ও সান্ধ্য বিভাগের পড়ুয়াদের মধ্যে এদের দু’জনকে কেন্দ্র করে দু’টি গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। কোন গোষ্ঠী কলেজে কর্তৃত্ব কায়েম করবে তা নিয়েই মাঝে মধ্যেই গোলমাল চলছিল। ওই দিন তা চরমে ওঠে।

Advertisement

টিএমসিপি সূত্রের খবর, ওই দিন দিবা ও সান্ধ্য বিভাগের পড়ুয়াদের মধ্যে কী নিয়ে মারামারির সূত্রপাত হয় তা বুঝে উঠতে পারছেন না সংগঠনের নেতৃত্বও। সংগঠনেরই এক নেতা জানান, বিকেল সওয়া পাঁচটা নাগাদ দিবা বিভাগের ইউনিয়ন রুমে মিঠুন ও অমিতের গোষ্ঠীর
মধ্যে প্রথমে বচসা শুরু হয়। পরে তা গড়ায় হাতাহাতিতে। লাঠি, ব্যাট, উইকেট ও ফাইটার দিয়ে ভাঙচুর করা হয় ইউনিয়ন রুমের চেয়ার, টেবিল, টিভি ও ল্যাপটপ। মিঠুনের মুখ ফেটে যায়। আহত হন অমিতও। আহতদের মধ্যে কয়েক জন এনআরএস হাসপাতালে ও কয়েক জন আরজিকর হাসপাতালে যান। পরে অবশ্য সকলকেই ছেড়ে দেওয়া হয়। এ দিন মিঠুন ও অমিতকে ফোন করলেও তাঁদের পাওয়া যায়নি। ঘটনায় নাম জড়িয়েছে শুভজি‌ৎ পাত্র, শানু মাকাল, রোহন দাসের। থানায় দুই গোষ্ঠীই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে।

সম্প্রতি কলকাতায় শাসক দলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে বার বার শিরোনামে উঠে এসেছে শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া কলেজ। চারুচন্দ্র কলেজেও বহু বার গোলমাল হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে প্রাক্তনদের হস্তক্ষেপের বিষয়টি। এই কারণে জয়পুরিয়া
কলেজ ঢোকার ক্ষেত্রে প্রাক্তনদের গতিবিধি বেঁধে দিয়েছিলেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও কয়েক দিন আগেই জয়পুরিয়া কলেজে ফের গোলমাল হয়েছে। তার পরে ফের বিদ্যাসাগর কলেজের এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে তা হলে কি খাস কলকাতাতেই শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের রাশ দলীয় নেতৃত্বের হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে!

কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম কুণ্ডুকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর জবাব, ‘‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’’ টিএমসিপি-র সভানেত্রী জয়া দত্ত অবশ্য বলেন, ‘‘কলেজে রাজনীতি কেবল বর্তমান পড়ুয়ারাই করতে পারবেন। মঙ্গলবার অমিত এবং মিঠুনের গোষ্ঠীর সদস্যদের ডেকে পাঠানো হয়েছে সাবধান করার জন্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন