Durga Puja 2022

সিপিএমের স্টলে কুণাল, ভোগ খেলেন আইএএস নন্দিনী, ‘বুদ্ধ-প্রিয়’ শিল্পপতি প্রসূন, মেলালেন উমা মেলালেন

শিল্পপতি প্রসূন ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রিয়। প্রসূনও বুদ্ধদেবের ভক্ত। তাঁর সঙ্গে আড্ডায় তৃণমূলের কুণাল ঘোষ আর রাজ্যপালের সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২২ ১৭:৪৭
Share:

রবিবার সিপিএমের বুক স্টলে কুণাল ও প্রসূন। — নিজস্ব চিত্র।

পুজো মণ্ডপের নাম— রামমোহন সম্মিলনী। আর সেই মণ্ডপেই সম্মিলিত এক প্রশাসনিক কর্তা, এক শিল্পপতি এবং এক রাজনীতিক। জমল আড্ডা। সবার সঙ্গে ভোগ খাওয়া হল, মাটির ভাঁড়ে চা পানও। তবে সব শেষে দেখা গেল রাজনৈতিক চমক। শিল্পপতি বন্ধুর অনুরোধে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষকে যেতে হল কাছেই একটি সিপিএমের বুকস্টলে। ওই শিল্পপতি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যামন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ‘ভক্ত’ প্রসূন মুখোপাধ্যায়। তবে আড্ডায় থাকলেও রাজনৈতিক রং থেকে দূরেই রইলেন প্রশাসনিক কর্তা মানে বাংলার রাজ্যপালের সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী।

Advertisement

এই সম্মিলনের একটা গল্প রয়েছে। যার শুরুটা সপ্তমীর সকালে। শোনা গেল কুণালের মুখেই। আইএএস নন্দিনীর জীবনের বড় সময় কলকাতায় কাটলেও বহু বছর শহরের দুর্গাপুজো দেখা হয়নি। এখন তিনি রাজ্যপাল লা গণেশনের সচিব। কথা ছিল সপ্তমীতে কলকাতায় থাকবেন গণেশন। কিন্তু শারীরিক কারণে তিনি থাকতে পারেননি। তবে সচিব নন্দিনীকে থাকতেই হয়েছে। মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনে রাজ্যপালের নির্দিষ্ট কর্মসূচি পালন করার দায়িত্ব তাঁর উপরেই বর্তায়। সেই সব পাট চোকার পরে নন্দিনীর ইচ্ছা হয়, কোনও একটা বারোয়ারি পুজোয় যাবেন। পুরনো বন্ধু কুণালকে ফোন করেন। তিনি তখন কামরহাটিতে। গাড়ি ঘোরাতে হয়। কারণ, তত ক্ষণে রাজভবন থেকে সুকিয়া স্ট্রিটমুখী নন্দিনীর গাড়ি।

এর পরে আড্ডা শুরু হয়। হয় ভোগ খাওয়াও। মাঝে মণ্ডপে জমা হওয়া কিশোরীদের সঙ্গে আড্ডার মেজাজে কেমন করে ভাল কেরিয়ার তৈরি করা যায় তা নিয়েও কথা বলেন নন্দিনী। এরই মধ্যে ওই আসরে উপস্থিত হন প্রবাসী বাঙালি শিল্পপতি প্রসূন। ‘ইউনিভার্সাল সাকসেস এন্টারপ্রাইজ’-এর কর্ণধারের সঙ্গে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সম্পর্কের কথা জানে বাংলার রাজনৈতিক মহল।

Advertisement

২০০৮-০৯ সালে হলদিয়ার পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুরের নয়াচরে ৩০ কোটি টাকায় নয়াচরের ১২ হাজার একর জমি প্রসূনকে দেওয়া হয়। পাশাপাশি নয়াচরের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য তাঁকে যে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করতে হবে, তা পুষিয়ে দিতে বারুইপুরে ৮ কোটি টাকার বিনিময়ে দেওয়া হয় আরও ১০০ একর জমি। কিন্তু কেমিক্যাল হাবের কাজ না-এগোনোয় বুদ্ধদেব সরকার ২০১০ সালে প্রসূনের সংস্থার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে দেয়। পাল্টা মামলা করেন প্রসূন। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরে নয়াচরের সেই জমি ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়। কারণ, অনেক সময় পার করেও প্রসূনের সংস্থা নয়াচরে পর্যটন, শিল্প পার্ক এবং তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ করতে পারেনি।

আড্ডা-মঞ্চে নন্দিনী, প্রসূণ এবং কুণাল। — নিজস্ব চিত্র।

সেই প্রসূন কলকাতার পুজোয় নস্টালজিক হয়ে পড়েন সিপিএমের বুকস্টলে যাওয়ার জন্য। অগত্যা, কুণালকেও যেতে হয়। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের লেখা যত বই ছিল, সব কেনেন প্রসূন। কুণাল কিছু না কিনলেও বলেন, ‘‘ওখানে উৎপল দত্তকে নিয়ে একটা বই দেখলাম। সেটা পরে সংগ্রহ করার ইচ্ছা আছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন