কোনা এক্সপ্রেসওয়ে চার লেনের। ওই রাস্তার উপর দিয়েই ছ’লেনের এলিভেটেড করিডর তৈরির অনুমতি দিল ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এনএইচএআই)। নবান্নের কাছে বিদ্যাসাগর সেতু থেকে শুরু হয়ে ছ’লেনের ওই রাস্তা সোজা গিয়ে মিশবে নিবড়ার কাছে দিল্লি এবং মুম্বই রোডের মুখে। এই কাজে খরচ ধরা হয়েছে ১২০০ কোটি টাকা। ‘ভারত মালা’ প্রকল্পে এলিভেটেড করিডর তৈরির কাজ করবেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।
কোনা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে রোজ বাড়ছে যাতায়াতকারী গাড়ির সংখ্যা। সেই সঙ্গে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা, হচ্ছে যানজটও। বন্দরের সমস্ত ভারী গাড়ি এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, সাঁতরাগাছি রেল ওভারব্রিজ বহু পুরনো হয়ে যাওয়ায় দুর্বল হয়ে পড়েছে। সে কারণে নতুন এই রাস্তা তৈরি হলে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপরে যেমন চাপ কমবে, তেমনই যানজট ও দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পাবেন মানুষ। এমনই মনে করছেন নবান্নের শীর্ষ কর্তারা।
এলিভেটেড করিডর কী মূলত যানজট এবং দুর্ঘটনা কমাতে এক্সপ্রেসওয়ে বা হাইওয়ের উপর দিয়ে তৈরি বিকল্প পথ। এই পথ চালু হলে বাড়বে যান চলাচলের গতি, কম সময়ে পৌঁছনো যাবে গন্তব্যে।
এলিভেটেড করিডর করার জন্য বহু দিন ধরেই চেষ্টা চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে তিনি কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গেও। তার পরেই কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেয়, বিদ্যাসাগর সেতু থেকে দিল্লি রোড পর্যন্ত নতুন এলিভেটেড করিডর ‘ভারত মালা’ প্রকল্পে তৈরি করা হবে। রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রেল, পূর্ত দফতর, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এবং রাইটসের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে আলোচনার পরে প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রাইটসকে।
গত ৩০ এবং ৩১ অক্টোবর দিল্লিতে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের শীর্ষ কর্তারা, সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রকের আধিকারিকেরা এবং রাইটসের হাইওয়ে বিভাগের কর্তাদের নিয়ে এক বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে প্রকল্প রিপোর্ট নিয়ে সবিস্তার আলোচনা হয়। তার পরেই সেটি মঞ্জুর করা হয়। বৈঠকে আরও ঠিক হয়েছে, এলিভেটেড করিডরে তিনটি রেল ওভারব্রিজ তৈরি করা হবে। তার মধ্যে দু’টি ওভারব্রিজের অনুমোদন দিয়েছেন রেল কতৃর্পক্ষ। একটি ওভারব্রিজের নকশা বদল করতে হয়েছে। তার জন্য দু’একর জমি লাগবে।
রাইটসের হাইওয়ে বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার টি সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, জানুয়ারি মাসের শেষে বা ফেব্রুয়ারির প্রথমে এলিভেটেড করিডর তৈরির দরপত্র ডাকা হবে। সে রকমই নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। নবান্নের খবর, মুখ্যসচিব নিজে বিষয়টি দেখছেন। তিনি রেল কর্তৃপক্ষ, পূর্ত দফতর, পুলিশ এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।