বিষমুক্ত ফসল পেতে জৈব চাষই চান সচিব

জৈব চাষ বা বিষমুক্ত ফসল চাষের উপরে গুরুত্ব দিতে হবে এবং বাজারে চাহিদা তৈরি হওয়াটাও যে জরুরি, রাজ্যের কৃষিসচিব সঞ্জীব চোপড়া সেটা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:০১
Share:

ভেষজ চাষের ফসল। নিজস্ব চিত্র

বিষাক্ত রাসায়নিক ধরা পড়ায় ফসল অনেক সময়েই বিদেশ থেকে ফেরত আসছে। পশ্চিমবঙ্গের সেই সব ফল, আনাজ, শস্য রফতানি করতে সমস্যা হচ্ছে। কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে চেষ্টা হলেও সংগঠিত জৈব চাষের ক্ষেত্রে এই রাজ্য যে এখনও বেশ পিছিয়ে, কৃষি দফতরের কর্তারা সেটা স্বীকার করে নিচ্ছেন। এই অবস্থায় জৈব চাষ বা বিষমুক্ত ফসল চাষের উপরে গুরুত্ব দিতে হবে এবং বাজারে চাহিদা তৈরি হওয়াটাও যে জরুরি, রাজ্যের কৃষিসচিব সঞ্জীব চোপড়া সেটা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন।

Advertisement

উত্তর শহরতলির এক বেসরকারি স্পা-রিসর্টে প্রাকৃতিক ও জৈব খাদ্য ও আনুষঙ্গিক সামগ্রী নিয়ে এক কর্মকাণ্ডের দ্বিতীয় তথা শেষ দিনের উদ্বোধনী বক্তৃতায় কৃষিসচিব জানান, ক্রেতারা ভাল জিনিস চাইলে কৃষকেরা সেটা উৎপাদন করবেন। বাজারে ভাল জিনিসের চাহিদা থাকা দরকার। কৃষিসচিবের কথায়, ‘‘একটা সময়ে কায়েমি স্বার্থ রক্ষায় কৃষিকাজে প্রচুর রাসায়নিক সার ও কীটনাশক দেওয়া হত। কিন্তু পরে বোঝা যায়, এতে চাষের জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’’ তিনি জানান, এখন প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে চাষ থেকে জৈব চাষে উত্তরণের কাজ চলছে।

দু’দিন ব্যাপী ‘প্রাকৃতিক ও জৈব জীবন যাপন’ শীর্ষক ওই কর্মকাণ্ডের আয়োজক ছিল একাধিক
স্বেচ্ছাসেবী ও বেসরকারি সংস্থা। সহায়তা দেয় কৃষি দফতরও। বিশ্ব জুড়ে জৈব কৃষি আন্দোলনের শীর্ষ সংস্থা হিসেবে গণ্য, ১১৭টি দেশের প্রতিনিধিত্বকারী ‘ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অর্গ্যানিক এগ্রিকালচার মুভমেন্টস (আইফোএএম)— অর্গ্যানিক্স ইন্টারন্যাশনাল’-ও যোগ দিয়েছিল।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের ৭৫ জন এবং তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক, ছত্তীসগঢ়, ওডিশা, ঝাড়খণ্ডের জনা পঁচিশ কৃষক নিজেদের পসরা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ওই ‘বিষমুক্ত হাট’-এ। ৭০ ধরনের দেশি চাল, নানাবিধ ভোজ্য তেল, ১৭ রকম বড়ি, ওডিশা ও ঝাড়খণ্ডের চার রকম শিম এবং সাত রকম বেগুন কিনতে ভিড় করেন ক্রেতারা। আয়োজকদের হিসেব অনুযায়ী ক্রেতা ছিলেন দু’হাজারেরও বেশি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী ও পাথরপ্রতিমা থেকে দেশি গরুর দুধ নিয়ে আসেন মহিলারা। দক্ষিণ দিনাজপুর, বাঁকুড়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে এসেছিল নলেন গুড়। ওই দুধ, গুড় আর গোবিন্দভোগ চাল দিয়ে পায়েস রান্না হয় হাট-চত্বরেই। গোয়া থেকে আসা রুটি প্রস্তুতকারকেরা হাতেকলমে দেখান, ভেজাল ও এসেন্স ছাড়া কী ভাবে ভাল পাউরুটি বানানো যায়।

আয়োজকদের পক্ষে অরূপ রক্ষিত বলেন, ‘‘খাদ্যের নিরাপত্তার জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ করছে। এ বার নিরাপদ খাদ্যের ব্যাপারে ক্রেতা ও উৎপাদকদের সচেতন হতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন