‘পরিচিতি নম্বর’ পাওয়ার জন্য আবেদনপত্র কিনেছিলেন যত জন, জমা পড়েছিল তার থেকেও বেশ কিছু কম। আর সেই নম্বর সংগ্রহ করেছেন মোট আবেদনকারীর মাত্র ছ’ভাগের এক ভাগ! ‘পরিচিতি নম্বর’ না নেওয়ার এই অনীহা রুখতেই আজ, শুক্রবার বিকেল থেকে পথে নামছে হাওড়ার পুলিশ ও প্রশাসন।
গত জানুয়ারি মাসে শহরে চলা টোটোগুলিকে ‘টিন’ (টেম্পোরারি আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) দেওয়ার জন্য হাওড়া পুরসভার তরফে একটি ফর্ম বিক্রি করা হয়। পুরসভার লাইসেন্স দফতরের আধিকারিক সোমনাথ দাস জানিয়েছেন, মোট ৬১৪৫টি ফর্ম বিক্রি হলেও জমা পড়েছে ৫৪৬২টি। এর পরে ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় ‘টিন’ দেওয়ার কাজ। ১৮২৬ টাকা রাজস্বের বিনিময়ে টোটোচালকেরা ওই অস্থায়ী ‘পরিচিতি নম্বর’ পাবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়।
সোমনাথবাবু বলেন, ‘‘মার্চের মাঝামাঝি এসে দেখা যাচ্ছে, মাত্র ১১৯২টি টোটো টিন সংগ্রহ করেছে। এটা আমাদের কাছে খুবই বিস্ময়কর।’’
হাওড়া পুরসভার কর্তারা মনে করছেন, অনেক টোটোচালকই টাকার বিনিময়ে ‘টিন’ নিতে রাজি নন। আবার অনেক টোটোরই বৈধ কোনও কাগজপত্র নেই। কারণ, সরকারি নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, ভ্যাট রসিদ-সহ টোটো কেনার বিল না দেখাতে পারলে ‘টিন’ নম্বর দেওয়া হবে না। সোমনাথবাবু বলেন, ‘‘অনেক টোটোই ঘুরপথে কেনা হয়েছে। তাদের অনেকের কাছেই বৈধ কাগজপত্র নেই। তাই এত কম সংখ্যক আবেদন জমা পড়েছে বলে মনে হয়।’’
এই বিষয়টি জানার পরেই বৃহস্পতিবার হাওড়ার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী একটি বৈঠক ডাকেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার টোটোকে ই-রিকশায় পরিবর্তন করার কথা বলেছে, যাতে পরিবহণ দফতর ওই সমস্ত ই-রিকশার রেজিস্ট্রেশন দিতে পারে। আর সেই জন্যই হাওড়া পুরসভা ওই অস্থায়ী ‘পরিচিতি নম্বর’ দিতে শুরু করেছিল, যাতে পরবর্তী সময়ে টোটো থেকে ই-রিকশায় পরিবর্তনে কোনও রকম অসুবিধা না হয়। কিন্তু যে সমস্ত টোটোর ওই পরিচিতি নম্বর নেই, আজ থেকে সেগুলিকে আটকে সতর্ক করবে পুলিশ। পাশাপাশি প্রত্যেক চালককে জানানো হবে, আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে ‘টিন’ না নিলে গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হবে।