আমাদের সর্বস্ব ছাই হয়ে গেল

দাউ দাউ করে আগুন তখন মাটি ছেড়ে আকাশে উঠতে শুরু করেছে। যেমন ধোঁয়া, তেমনই তাপ। একটার পর একটা দোকানে ছড়িয়ে পড়ছে। কালুরা তো ঘাড়ে করে জলের পাইপ নিয়ে ঢুকে গেল একেবারে আগুনের কাছে।

Advertisement

দুলাল দেব (স্থানীয় ব্যবসায়ী)

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৪৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

এমন ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী হতে হবে, কখনও ভাবিনি। গোরাবাজারকে ঘিরেই আমার বেড়ে ওঠা, নিজের ব্যবসা। কিন্তু রবিবার রাতের আতঙ্ক এখনও কাটছে না। বাজারের পাশেই বাড়ি। হঠাৎ শুনলাম, আগুন লেগেছে। কয়েক জনকে জানিয়েই দৌড়ে গেলাম বাজারে। দেখি, আগুন ছড়াচ্ছে। এ দিকে, বাজারে ঢোকার কোল্যাপসিব্‌ল গেট বন্ধ। পাশেই হরিজন বস্তি। সেখানকার ছেলেরাও ঝাঁপিয়ে পড়লেন। পাশে তখন পেয়ে গিয়েছি বাজারেরই দুই সঙ্গী কালু ও কুঁজোকে। যে যার মতো ঘটি-বাটি-বালতি করে জল নিয়ে আসতে শুরু করেছেন। এ ভাবে কতটা সময় পেরিয়েছে, জানি না। এক সময় দেখলাম, দমকল এসেছে। কিন্তু দমকলকর্মীরাও ভিতরে ঢোকার পথ পাচ্ছিলেন না। এর পরেই গেট ভেঙে আগুনের জায়গায় গিয়ে কঠিন লড়াই শুরু হল। দাউ দাউ করে আগুন তখন মাটি ছেড়ে আকাশে উঠতে শুরু করেছে। যেমন ধোঁয়া, তেমনই তাপ। একটার পর একটা দোকানে ছড়িয়ে পড়ছে। কালুরা তো ঘাড়ে করে জলের পাইপ নিয়ে ঢুকে গেল একেবারে আগুনের কাছে। তখন একটাই লক্ষ্য, আগুন রুখে দোকানের কিছু সামগ্রী ও টাকা ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেওয়া। কিন্তু রাতের উত্তুরে হাওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়াচ্ছিল। কী ভাবে লড়াই চালাব, ভেবেই পাচ্ছিলাম না। তার মধ্যেই বেশ কিছু দোকানের টাকা-পয়সা উদ্ধার করে মালিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সকলের যে কী মনের অবস্থা তখন! নিজেদের দোকান বাঁচাতে অনেকেই তখন দমকলকর্মীদের টানাটানি করতে শুরু করেছেন। চোখের সামনে পুড়ে যাচ্ছিল লক্ষ লক্ষ টাকার জিনিস। কত ছোট ব্যবসায়ী রয়েছেন বাজারে। তাঁদের দোকানও চোখের সামনে ছাই হয়ে যাচ্ছিল। আগুন নেভার পরেও ভুলতে পারছি না সেই দৃশ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন