Transport Department Notification

হাই কোর্টের নির্দেশে বেসরকারি যানবাহনের সময়সীমা বৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তি জারি পরিবহণ দফতরের, বাস মালিকদের অসন্তোষ প্রকাশ্যে

কলকাতা হাই কোর্ট যানবাহনের বয়ঃসীমা তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠনগুলিকে খুশি করতে পারেনি।‌ বরং অসন্তোষ প্রকাশ করে বাস সংগঠনের নেতারা প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:১৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

স্বাস্থ্য এবং দূষণমাত্রা খতিয়ে দেখে যানবাহনের মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। এ বার সেই নির্দেশ মেনেই বিজ্ঞপ্তি জারি করল পরিবহণ দফতর। এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) এলাকায় ১৫ বছরের বয়ঃসীমা উত্তীর্ণ হয়েছে এমন যানবাহন চলাচলে আর কোনও বাধা রইল না। দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি করে আসছিল বেসরকারি বাস সংগঠনগুলি। মূলত তারাই আদালতে বাসের সময়সীমা বৃদ্ধি নিয়ে মামলা দায়ের করেছিল। সেই মামলার ভিত্তিতেই কলকাতা হাই কোর্ট যানবাহনের বয়ঃসীমা তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠনগুলিকে খুশি করতে পারেনি।‌ বরং অসন্তোষ প্রকাশ করে বাস সংগঠনের নেতারা প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।

Advertisement

এ প্রসঙ্গে সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের নেতা টিটু সাহা বলেন, ‘‘পরিবহণ দফতর নিজেদের দেওয়া হলফনামায় আদালতে যে কথা জানিয়েছিল, তা বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ পায়নি। তাই স্বাভাবিক কারণেই আমরা এই বিজ্ঞপ্তিতে খুশি হতে পারছি না।’’ অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে, তা ১৫ বছরের সময়সীমা তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু নির্দিষ্ট কোনও সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। কিন্তু, পরিবহণ দফতর বাস চালানোর সময়সীমা দু’বছর বেঁধে দিয়েছে। সঙ্গে ছয় মাস অন্তর বিভিন্ন পরীক্ষা দিয়ে বাসগুলিকে সুস্থতার প্রমাণ দিতে বলা হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তি দেখার পর আমরা আবার নতুন করে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইছি।’’

প্রসঙ্গত, পরিবেশ আদালতের নির্দেশিকার ভিত্তিতে বৃহত্তর কেএমডিএ এলাকায় ১৫ বছরের পুরনো বাসের পারমিটের নবীকরণ বন্ধ করে দিয়েছিল পরিবহণ দফতর। সেই নিষেধাজ্ঞার কারণে বহু বাস বাতিল হতে বসেছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ মাস আগে বাস বাতিল করার ক্ষেত্রে সেটির আয়ুর ভিত্তিতে নয়, স্বাস্থ্যকে মাপকাঠি হিসাবে ধরার দাবি জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় বেসরকারি বাসমালিকদের ছ’টি সংগঠন। সম্প্রতি এই মামলায় বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায় বাসের স্বাস্থ্য এবং দূষণমাত্রা খতিয়ে দেখে মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। হাই কোর্টের এই নির্দেশকে ‘ঐতিহাসিক জয়’ বলে দাবি করে বেসরকারি বাসমালিক সংগঠনের নেতৃত্ব। কিন্তু মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর যে ভাবে পরিবহণ দফতর ওই বাসগুলির মেয়াদ বৃদ্ধি মাত্র দুই বছরের জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছে, তাতে ক্ষুন্ন হয়েছে বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠনগুলি।

Advertisement

এক বাস মালিকের কথায়, ‘‘২০২০ সালের করোনা সংক্রমণের সময় লকডাউন পরিস্থিতিতে বেসরকারি বাস শিল্প ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এই শিল্পে নতুন করে কোনও বিনিয়োগ আসছে না। এমনকি কোনও সরকারি উদ্যোগে পর্যন্ত নেই বেসরকারি বাস শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে। তার ওপর গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো ১৫ বছরের বয়ঃসীমার বাস বাতিলের নির্দেশ আমাদের মতো বাস মালিকদের কোমর ভেঙে দিয়েছিল। কিন্তু আমাদের আবেদনের ভিত্তিতে যখন আদালতের রায় বাস মালিকদের পক্ষে গেল, তখন নতুন করে নিজেদের মর্জিমাফিক বিজ্ঞপ্তি জারি করে পরিবহণ দফতর বেসরকারি বাস শিল্পের পুনরুজ্জীবনে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে বেসরকারি বাস শিল্প ধ্বংস হওয়া, এখন কেবলমাত্র সময়ের অপেক্ষা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement