আইনজীবীর বাড়িতে এক মহিলাকে ডেকে এনে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় সম্প্রতি গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে। তৃতীয় অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। অভিযুক্ত আইনজীবীর দিকেও নজর রাখছেন তদন্তকারীরা। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৪ অক্টোবর সকালে সোনারপুর থানা এলাকার নরেন্দ্রপুরে।
বারুইপুর জেলার এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগকারিণী বারুইপুর আদালতে গোপন জবানবন্দিও দিয়েছেন।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, দুই ধৃতের নাম রবীন সর্দার এবং সুজন ওরফে সুশান্ত মণ্ডল। ধৃত দু’জনকে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্তকারীদের কাছে ওই মহিলা অভিযোগে জানিয়েছেন, সোনারপুর থানার অধীন বোসপুকুর এলাকায় রবীন সর্দারের বাড়িতে রান্নার কাজ করতেন তিনি। ৪ অক্টোবর সকালে রবীন ফোন করে তাঁকে ভাল কাজের টোপ দিয়ে নরেন্দ্রপুর এলাকায় আসতে বলে। সেই মতো সকাল ১১টা নাগাদ নরেন্দ্রপুরে আসেন ওই মহিলা। সেখানে রবীন তার এক বন্ধু সমীরের সঙ্গে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। মহিলা সেখানে পৌঁছতেই তাঁকে রাস্তার ধারের একটি সাদা বাড়িতে নিয়ে যায়।
প্রথমে দোতলার একটি অফিস ঘরে নিয়ে গিয়ে তাঁকে বসানো হয়। মহিলার দাবি, এক ব্যক্তিকে দেখিয়ে রবীন বলে, ‘‘ইনি উকিলবাবু। এখানেই কাজ করতে হবে।’’ তার পরে তাঁকে নীচের একটি ঘরে নিয়ে যায় রবীন ও সমীর। অভিযোগকারিণী জানান, কিছু ক্ষণ পরে সুজন নামে আরও এক জন সেখানে উপস্থিত হয়। উকিলবাবুও দোতলার অফিস থেকে নীচে নেমে আসে। মহিলার অভিযোগ, উকিলবাবু এসেই বাইরে থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। এর পরেই রবীন, সুজন ও সমীর মিলে তাঁকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পরে তিন জন তাঁকে শাসানিও দেয় বলে অভিযোগে জানিয়েছেন তিনি।
ওই মহিলার কথায়, পুরো ঘটনা তিনি তাঁর স্বামীকে জানান। স্বামীর পরামর্শ অনুযায়ী সম্প্রতি পুলিশের কাছে অভিযোগও করেন তিনি। তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, ওই মহিলার মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে। গোপন জবানবন্দিও নেওয়া হয়েছে। বারুইপুর জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ করা হবে।’’
রাজ্য বার কাউন্সিলের সদস্য তথা আলিপুরের আইনজীবী বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোনও আইনজীবীর অফিস বা বাড়িতে এমন ঘটনা অনভিপ্রেত। তবে পুলিশ অনুসন্ধান করে প্রকৃত সত্য খুঁজে বার করবে বলে আমি আশাবাদী।’’