দুই বাসের রেষারেষি, প্রাণ গেল দুই কিশোরের

মৃন্ময় পরিখা (২৩) নামে এক তরুণের সঙ্গে বিট্টু ও আকাশ স্কুটারে চেপে ফুটবলের সরঞ্জাম কিনতে মুরারিপুকুরে গিয়েছিল। ফেরার পথে খান্না-গামী ২১৫এ/১ রুটের একটি বাসের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৮ ০২:৫৪
Share:

নিথর: পিষ্ট কিশোরেরা। পাশে তাদের স্কুটার। নিজস্ব চিত্র

দুই বাসের রেষারেষি ফের কেড়ে নিল দু’টি প্রাণ। সোমবার রাত সওয়া দশটা এই ঘটনা ঘটেছে মুচিবাজার পোস্ট অফিসের কাছে উল্টোডাঙা মেন রোডে। মৃত দু’জনই কিশোর। নাম, বিট্টু সেন (১৬) ও আকাশ দত্ত (১১)।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, মৃন্ময় পরিখা (২৩) নামে এক তরুণের সঙ্গে বিট্টু ও আকাশ স্কুটারে চেপে ফুটবলের সরঞ্জাম কিনতে মুরারিপুকুরে গিয়েছিল। ফেরার পথে খান্না-গামী ২১৫এ/১ রুটের একটি বাসের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল তারা। কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না। সেই সময়ে ২১৫এ রুটের একটি বাস পিছন থেকে এসে স্কুটারে ধাক্কা মারে। আকাশ ও বিট্টু ছিটকে পড়তেই বাসের চাকা পিষে দিয়ে যায় তাদের। স্কুটার যিনি চালাচ্ছিলেন, সেই মৃন্ময়ও গুরুতর জখম অবস্থায় আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিট্টু, আকাশ ও মৃন্ময়, তিন জনই দাসপাড়ার শীতলামন্দির এলাকার বাসিন্দা। আকাশ ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। বিট্টু মাধ্যমিকের পড়ে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিল।

জানা গিয়েছে, ফুটবলপাগল ওই দুই কিশোর স্কুটারে ফেরার পথেও মোবাইলে বিশ্বকাপের খেলা দেখছিল। তাদের যে ফোনটি উদ্ধার হয়েছে, তাতে সেই সময়েও খেলা চলছিল। তাদের পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, বিট্টু ছিল আর্জেন্টিনার সমর্থক। আকাশ ব্রাজিলের। বিট্টু তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। আকাশের এক দিদি রয়েছে।

Advertisement

দুর্ঘটনার পরে দুই বাসেরই চালক ও কন্ডাক্টরেরা পালিয়ে যান। রাস্তায় দুই কিশোরের দেহ পড়ে থাকতে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়ে জনতা। বাসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা হলেও তাতে বাদ সাধে বৃষ্টি। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।

দুর্ঘটনার পরেই দু’টি বাস থেকে নেমে পড়েন যাত্রীরা। তাঁরা জানান, বাস দু’টি অনেক ক্ষণ ধরেই রেষারেষি করছিল। বারণ করলেও চালকেরা কান দেননি। এলাকাবাসীর বক্তব্য, ওই রাস্তায় রাত ন’টার পরে পুলিশ না-থাকলে প্রতিদিনই এমন রেষারেষি চলে। সুদীপ পাল ও খোকন সর্দার নামে দুই প্রত্যক্ষদর্শী জানান, একটি বাস অন্যটিকে ওভারটেক করতে গিয়েই সামনের স্কুটারটিকে দেখতে পায়নি। যার ফলে এমন মর্মান্তিক পরিণতি ঘটে গেল দুই কিশোরের।

বিট্টু ও আকাশের প্রতিবেশী রাহুল দাস জানান, ওই দুই কিশোর সারা ক্ষণ বিশ্বকাপেই বুঁদ হয়ে থাকত। গত কয়েক দিন ধরে ফুটবলই ছিল তাদের ধ্যানজ্ঞান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন