সরকারি হাসপাতালে মিলল আবার দালালচক্রের সন্ধান। —প্রতীকী ছবি।
সরকারি হাসপাতালে দালালচক্র নতুন ঘটনা নয়। কখনও হাসাপাতালে শয্যা পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা তোলার অভিযোগ, আবার কখনও অন্য কোনও পরিষেবার সুযোগ করে দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়। তেমনই অভিযোগে এ বার এসএসকেএম এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে দুই ‘দালাল’কে গ্রেফতার করল পুলিশ।
সরকারি হাসপাতালে রোগীর চাপ অনেক থাকে। সেখানে সব সময় সহজে শয্যা পাওয়া যায় না। তবে অনেক রোগীর পরিবারই হাসপাতালে বেডের জন্য হন্যে হয়ে ঘোরে। তাদের এই অসহায়তার সুযোগ নেয় দালালচক্র! অভিযোগ, বলা হয়, হাসপাতালে শয্যার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। কিন্তু তার বিনিময়ে গুনতে হবে মোটা টাকা! সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল।
পুলিশ সূত্রে খবর, মেডিক্যাল কলেজে দালালচক্র চালানোর অভিযোগে সচিন রাউত নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করাতে আসা এক রোগীকে বেড পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ১০ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন তিনি। তবে ওই রোগীর পরিবার অত টাকা দিতে পারবে না বলে জানায়। চলে দরাদরি। শেষ পর্যন্ত পাঁচ হাজার টাকায় রফা হয়। তবে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়ার পরেও হাসপাতালে বেড মেলেনি বলে অভিযোগ রোগীর পরিবারের। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সচিনকে গ্রেফতার করে বৌবাজার থানার পুলিশ।
অন্য দিকে, এসএসকেএমেও দালালচক্রের অভিযোগ উঠেছে। সেখানেও রোগীর পরিবারকে পরিষেবা পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা তোলার অভিযোগে গোলাম রসুল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দালালচক্রের অভিযোগকে কেন্দ্র করে গত বছর শোরগোল পড়েছিল মেডিক্যাল কলেজে। রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালেই রোগীদের শয্যা পেতে সমস্যা হয় বলে অভিযোগ। কোনও কোনও ক্ষেত্রে দালালেরা টাকা চান রোগীর আত্মীয়দের কাছ থেকে। টাকা দিলে শয্যা পাওয়া যাবে বলে তাঁদের জানানো হয়। গরিব মানুষ অনেকেই সেই টাকা জোগাড় করে উঠতে পারেন না। ফলে শয্যাও পান না তাঁরা। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াতেই তৎপর হন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। করা হয় নানা পদক্ষেপও। তবে তার পরেও যে সমস্যা মেটেনি, তা এই গ্রেফতারির ঘটনা থেকেই বোঝা যাচ্ছে বলে দাবি রোগীদের একাংশের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘‘আমরা নজর রাখছি।’’